কটিয়াদীতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা

0

মিজানুর রহমানঃ

কিশোরগন্জের কটিয়াদীতে স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে জসিম উদ্দিন (৩২) নামে এক মাদকাসক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝিড়ারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক জসিম উদ্দিন একই গ্রামের দুখু মিয়া ওরফে দুইখ্যা চুরের ছেলে এবং নিহত স্ত্রী রিনা আক্তার (৩০) ওই গ্রামেরই মহরম আলীর মেয়ে ও তিন সন্তানের জননী।

জানা যায়, জসিম মাদকসেবী ও বিক্রেতা। কয়েক মাস আগে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সপ্তাহখানেক আগে নিহত রিনা আক্তার স্বামী জসিম উদ্দিনকে না জানিয়ে তাদের তিন সন্তানকে বাড়িতে রেখে কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুরচলে যায়। জসিমের সন্দেহ তারই এলাকার জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির সহযোগিতায় রিনা দেহব্যবসা করে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিনা বাড়িতে ফিরে এলে মাদকাসক্ত স্বামী জসিম উদ্দিন কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে পেটায়। ফলে রিনা আক্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। রাত ১১টার দিকে গুরুতর আহতাবস্থায় জসিম উদ্দিন রিনাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে চিকিৎসার জন্য কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংবাদ পেয়ে এ সময় পুলিশ হাসপাতাল থেকে মাদকাসক্ত জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত রিনা আক্তারের পিতা মহররম আলী বাদী হয়ে রাতেই জসিম উদ্দিনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

কটিয়াদী মডেল থানা কম্পাউন্ডে আটক জসিম উদ্দিন জানান, আমার বউ রিনা ছোট ছোট তিনটি সন্তানকে বাড়িতে ফেলে রেখে বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। জাকিরের সহযোগিতায় সে দেহব্যবসা করেন। জাকিরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে। এ জন্য আমি তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাইরা ফালাইছি।

নিহত রিনার বাবা মহররম আলী জানান, জসিম একজন মাদকসেবী। সে আমার মেয়েকে সবসময়ই নির্যাতন করত। জসিম রিনাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ সময় তার বাড়ির লোকজন তাকে বাধা দিল না কেন? মারপিট করার সময় কেউ তাকে বাধা দিলে আমার মেয়েকে এমন নিষ্ঠুরভাবে মারতে পারত না। এখন তাদের তিন শিশুসন্তানকে কে লালনপালন করবে? এ হত্যাকাণ্ডে জসিমের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত থাকলে আমি সবার শাস্তি চাই।

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদাত হোসেন  জানান, মাদকাসক্ত জসিম উদ্দিন প্রায়ই তার স্ত্রী রিনা আক্তারকে মারধর করত। মঙ্গলবার রাতে সে তার স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে নিজেই লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে ও ঘাতক জসিম উদ্দিনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Share.