মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচুর পাশাপাশি মধু চাষেও লাভবান চাষিরা

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
পুরো গ্রাম জুড়েই লিচু বাগান। বাগানের নিচে রয়েছে সারি সারি মৌমাছির বাক্স। ফুলের মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা ফিরছে ওই বাক্সে। কিছুক্ষণ পর পর মৌমাছির বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করছে চাষিরা। এটা কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের চিত্র। ওই গ্রামে লিচু চাষের পাশাপাশি মধু চাষিরাও বানিজ্যিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন মধু চাষ করে।

জানা যায়, পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্ব দিকে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম। এ গ্রামে লিচুর পাশাপাশি লিচু ফুল থেকে ভাল মানের মধুও চাষ করছে মধু চাষিরা। এ গ্রামে এমন কয়েকজন মধু চাষি রয়েছেন, যারা এ মৌসুমে লিচু বাগান থেকে মধু চাষ করে ভাল লাভবান হচ্ছেন বলে জানা যায়।

শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে এবার লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। গাছে গাছে মুকুলে ছেয়ে গেছে। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তাছাড়া লিচু চাষের পাশাপাশি মধু চাষিরাও ভাল মানের মধু উৎপাদন করতে পেরেছেন এ বছর।

ওই গ্রামের লিচু চাষি মো. মোখলেছুর রহমান দাদা ভাই বলেন, এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। তিনি আরও জানান, আমাদের লিচু চাষের পাশাপাশি মধু চাষিরাও আমাদের বাগান থেকে অস্থায়ী ভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৌমাছির মাধ্যমে লিচু ফুল থেকে মধু উৎপাদন করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন।

গাজীপুরের মেসার্স মনির মৌ খামারের পরিচালক মিঠু মিয়া বলেন, লিচু ফুলের মধুর চাহিদা প্রচুর। তাই প্রতিবছর এ মৌসুমে আমরা গাজীপুর থেকে এ গ্রামে আসি লিচু ফুলের মধু সংগ্রহ করতে। এখানে থেকে প্রায় একমাস মধু সংগ্রহ করে থাকি। এখানে মধু সংগ্রহের জন্য এ বছর ৫৫টি মৌমাছির বাক্স এনেছি। সপ্তাহে একবার বাক্স গুলো খুলতে হয় মধু সংগ্রহের জন্য। সপ্তাহে চারমণ মধু উৎপাদন হয়।

মঙ্গলবাড়িয়া মৌ খামারের মালিক ছফির উদ্দিন লিমন বলেন, গত চার বছর ধরে আমি লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছি। অনেকেই এ গ্রামে আসেন আসল ও খাটি মধু কেনার আশায়। লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে ড্রাম ভরে রেখে দেই। প্রতিদিনই লোকজন আসেন মধু কিনতে। ৫০০ টাকা দরে এক কেজি মধু খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন মধু সংগ্রহের জন্য আমার ৬৫টি বাক্স রয়েছে। সপ্তাহে পাঁচমণ মধু সংগ্রহ হয়। তিনি আরও বলেন, মধু চাষের জন্য সরকারি ভাবে কোন সহযোগিতা পাইনি। যদি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেতাম তাহলে আরও ভাল হতো।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল হাসান আলামিন বলেন, এ গ্রামে প্রায় চার হাজার লিচু গাছ রয়েছে। মৌমাছির চাষ লিচু বাগানের জন্য খুবই উপকারি। এতে লিচু ফুলের পোকামাকড় অনেকাংশে কমে যাবে এবং লিচুর ফলনও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, এক খাতে কোন আর্থিক সহযোগিতা আসেনি। তবে লিচু চাষে স্থানীয় বাগান মালিকদের সরকারি সহযোগিতায় লিচু চাষ করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

Share.