মেহেদির রঙ না মুছতেই বাইক কেড়ে নিল কিরণের প্রাণ

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
হাতের মেহেদির রঙ এখনো গাঢ়, মুছেনি। নববধুর সঙ্গে কেটেছে মাত্র তিনদিন। এরই মধ্যে নতুন বাইক কেড়ে নিলো সব স্বপ্ন। আচমকা এক ঝড়ে ভেঙ্গে চুরমার করে দিলো নবদম্পতির সংসার। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন নতুন বর প্রবাসী কিরণ। এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। কান্নার রোল পড়ছে দুটি পরিবারে।

আজ শুক্রবার ভোর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ নিজ বাড়িতে এলে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে চারপাশের পরিবেশ। নির্বাক নববধু ও তাঁর পরিবারের লোকজন। বিয়ে হতে না হতেই বিদায় নিলো স্বামী। এমন পরিস্থিতিতে চোখের জলে ভাসছে সবাই।

বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার সৈয়দগাঁও গ্রামে এ নির্মম দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিহত কিরণ(৩২) পৌর এলাকার সৈয়দগাঁও গ্রামের মো. ফরিদ উদ্দিনের ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুবাই প্রবাসী কিরণ মিয়া ১৫ দিন আগে বাড়ি আসেন। বাড়ি এসে তিনি একটি নতুন বাইক কিনেন। গত রবিবার(২০ নভেম্বর) তিনি উপজেলার চরদেওকান্দি গ্রামে বিয়ে করেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে তিনি নতুন বাইকটি নিয়ে ঘুরতে বের হন। বাইকটি নিয়ে তিনি পাকুন্দিয়া-মঠখোলা পাকা সড়ক দিয়ে সৈয়দগাঁও বড় মসজিদের সামনের মোড়ে পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে তিনি সড়কে ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয় লোকজন আহত কিরণকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত নয়টার দিকে তিনি মারা যান। পরে আজ শুক্রবার ভোর রাতে তাঁর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

স্থানীয় কাউন্সিলর মোস্তফা কামাল বলেন, মাত্র তিনদিন আগে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পরপরই কিরণের বিদায়কে কেউ মেনে নিতে পারছেনা। কাঁদছে নিহত কিরণ ও নববধুর স্বজনরা। মেহেদির রঙ মুছতে না মুছতেই স্বামী হারালেন নববধু। এমন ঘটনায় শোকে স্তব্ধ এলাকার সব মানুষ। তিনি বলেন আজ শুক্রবার জুম্মাবাদ তাঁর নিজ বাড়িতে জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ হাসান সুমন বলেন, শুনেছি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাইক দুর্ঘটনায় সে নিহত হয়েছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Share.