অটোরিকশা ছিনতাইচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
চালককে অজ্ঞান করে অটোরিকশা ছিনতাইচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বরুনাকান্দা গ্রামের মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে শিপন মিয়া (২৫), নান্দাইল মাইজহাটি গ্রামের আব্দুল মুসলিম উদ্দিনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪২), কিসমত রসুলপুর গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে অংকুর মিয়া ওরফে রিপন (২৮), একই উপজেলার মোরাগালা গ্রামের মৃত ফিরোজ খানের ছেলে শাহীন খান (৩২) ও কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার বোরগাঁও গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৫)।
তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত দুটি অটোরিকশা, একটি মোবাইল ফোনসেট, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও চেতনানাশক দুটি ড্রপ উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, গত ১৪ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত কাজিরগাঁও গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে অটোচালক মামুন মিয়া (২২) প্রতিদিনের মত অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চৌদ্দশত বাজার থেকে শিপন মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম ও অজ্ঞাত একজনসহ মোট তিনজন যাত্রীবেশে মামুনের অটোরিকশায় করে কিশোরগঞ্জ ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের দিকে রওনা হয়। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে অপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদেরকে অনুসরণ করতে থাকে। পথিমধ্যে তারা অটোচালক মামুনকে চেতনানাশক স্প্রে প্রয়োগে অজ্ঞান করে। পরে কিশোরগঞ্জ সদরের লতিবাবাদ ইউনিয়নের মায়াকানন পার্ক সংলগ্ন জনতা বাজারগামী রাস্তার পাশে নিয়ে মামুনকে ফেলে রাখে। ছিনতাইকারীরা মামুনের অটোরিকশা, মোবাইল ফোন ও নগদ দেড়হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। ঘটনাটি পাশের একটি বাড়ির ক্লোজসার্কিট ক্যামেরায় (সিসিটিভি) রেকর্ড হয়। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় ভিকটিম মামুনের পিতা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ইতোমধ্যে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ঘটনার তদন্ত শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল ১৭ ডিসেম্বর শিপন মিয়াকে নান্দাইল উপজেলার বরুনাকান্দা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। পরে অপর চার আসামিকেও তাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি আসামি সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে, অন্য একটি অটোরিকশা আসামি অংকুর মিয়ার কাছ থেকে এবং আসামিদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়। অটোরিকশা ছিনতাইচক্রের মালামাল ক্রয়– বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় শাহীন খানকে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এই চক্রের সঙ্গে কমপক্ষে ১৫ জনের মত জড়িত। গ্রেফতার পাঁচজন ছাড়াও চক্রের চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে অটোচালকদেরকে আরও সচেতন হওয়া দরকার বলে মনে করেন পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোঃ আল আমিন হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।