আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে একটি মাদ্রাসার জায়গা জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মামলার বাদি মোঃ ইদ্রিস আলী নামের এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। বাদি ইদ্রিস আলী নিজেই আদালতের আদেশ অমান্য করে মাদ্রাসার কয়েকটি টয়লেট ও প্রসাবখানা ভাঙচুর করে দখলিয় জায়গায় কয়েকটি পাকা খুঁটি পুঁতে রেখেছেন। সম্প্রতি উপজেলার তারাকান্দি গ্রামে জামিয়া মাদানিয়া সফিউল উলুম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। গত এক মাস ধরে প্রসাবখানা ও টয়লেট ব্যবহার করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক ২০১০ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। তারাকান্দি মৌজার ৩৫৪নং খতিয়ানে আর এস ৩৫২২নং দাগের ৭২ শতাংশ কেনা জমিতে মাদ্রাসাটি নির্মাণ করে পরিচালনা করে আসছেন তিনি। মাদ্রাসাটিতে ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিপক্ষ মোঃ ইদ্রিস আলী সম্প্রতি ওই জমির মধ্যে ১০ শতাংশ জমি তাদের দাবি করায় দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিশ-দরবার হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। পরে ২০২০ সালে আদালতে মামলা করেন ইদ্রিস আলী। ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আদালত মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থানে থাকার জন্য আদেশ জারি করেন। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল সকালে প্রতিপক্ষ ইদ্রিস আলী তাঁর তিন ভাই মিনহাজ উদ্দিন, আল-আমিন ও মনজিল মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ওই মাদ্রাসায় হামলা চালায়। এ সময় তারা মাদ্রাসার চারটি টয়লেট ও চারটি প্রসাবখানা ভাঙচুর করে সেখানে কয়েকটি পাকা পিলার পুঁতে রাখে। এ ছাড়াও তামিম ও হাসান নামের মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে মারধর করা হয়। ঘটনার পর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিক বাদি হয়ে ইদ্রিস আলীসহ তাঁর তিন ভাইকে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মোহতামিম মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইদ্রিস আলী তাঁর তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসার ১০ শতাংশ জায়গা দখলে নিয়ে চারদিকে কয়েকটি পাকা পিলার পুঁতে রেখেছে। এ ছাড়াও মাদ্রাসার চারটি টয়লেট ও চারটি প্রসাবখানা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। প্রসাবখানা ও টয়লেট না থাকায় গত একমাস ধরে ছাত্ররা খুব কষ্টে দিন যাপন করছে। মাদ্রাসার সমস্ত জমির দলিলসহ সব কাগজপত্র আমার রয়েছে।
অভিযুক্ত ইদ্রিস আলী বলেন, বাবা-মার ওয়ারিশসহ ১০ শতাংশ জমি ওই মাদ্রাসায় আমরা পাব। আমাদের পাওনা ১০ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে ওই জায়গার মধ্যেই খুঁটি পুঁতে রেখেছি। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খুঁটিগুলো এ জায়গার মধ্যেই থাকবে।
পাকুন্দিয়া থানার উপ-পরিদর্শক(এস আই) শাহ কামাল বলেন, আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে মাদ্রাসার জমি জোরপূর্বক দখলে নেওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।