স্টাফ রিপোর্টারঃ
শেখ হাসিনা সরকার খুব অচিরেই চলে যাবে। যদি না যায় আমি মনে করবো আমার ৫৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা বৃথা। শেখ হাসিনা কোনদিন ২০২৩ সালের নির্বাচন করতে পারবে না। ২০২৩ এর শেষে বা ২০২৪ সালের প্রথমে শেখ হাসিনার অধিনে কোন নির্বাচন হবে না-না-না। এই দেশে জনগণের সরকার হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে। সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বেগম খালেদা জিয়া জেল থেকে বেরিযে এসে বিএনপি’র নেতৃত্ব দিবেন। তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী শক্তি জয়ী হবে। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে, আগামী দিনে জীবনপন আন্দোলনের মাধ্যমে অবশ্যই শেখ হাসিনার সরকারকে এ দেশ থেকে বিদায় করবো।
সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, গত ১ জুলাই দুপুরে তার নির্বাচনী এলাকা অষ্টগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তিতুমীর হোসেন সোহেলের গ্রেফতার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এসময় তার নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হন। পরে মিছিল নিয়ে বিএনপি অফিসের দিকে যেতে চাইলে পতিমধ্যে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় বিএনপি’র ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হোন। ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মাহাববু আল আকতার, অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদক জিএম মোশারফ উদ্দিন হালিম, বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন আলম, ইটনা উপজেলা যুবদল নেতা রিয়েল মোল্লা, হারুন মিয়া এবং মিঠামইন উপজেলা যুবদল নেতা তোফাজ্জল হোসেন। এরপর রাতে উপজেলা ছাত্র লীগের সভাপতি শেখ তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ সাঈদ আহম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুলসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়। মিথ্যা মামলা দায়েরের পর থেকে প্রতিরাতে নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি প্রদান ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। পুলিশের ভয়ে নেতাকর্মীরা হাওরে হাওরে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
ফজলুর রহমান আরো বলেন, গত ১০ বছর সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ক্ষমতা থাকাকালিন কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) উপজেলার জনসাধারণ এক প্রকার জিম্মি অবস্থায় পরাধীন জীবন যাপন করেছেন। এই তিন উপজেলার মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার দূরের কথা তাদের সাথে কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না। মুখ খুললেই তের শিকের বাসিন্দা হতে হয়েছে। এরকম অবস্থা যেন এই এলাকা রাষ্ট্রের মধ্যেই আরেকটি রাষ্ট্র। আর সেই রাষ্ট্রের একচ্ছত্র অধিপতি একটি পরিবার। প্রশাসনযন্ত্র থেকে শুরু করে সবকিছু পরিবারটির নিয়ন্ত্রণে। জেল জুলুম আর নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ভাটি এলাকাকে এখন এক আতঙ্কের জনপদে পরিনত করা হয়েছে। বিগত ১০ বছর আমি নিজেও আমার এলাকায় যেতে পারিনি। নানা অজুহাতে পদে পদে বাধা দেওয়া হয়েছে। একইভাবে এখনও আমাদের শৃঙ্খলিত করে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সর্বশক্তি নিয়ে মিঠামইনে অবস্থান করছেন। সেখানে থেকে তিনি কলকাঠি নেড়ে গণতন্ত্রকামী, নির্যাতিত-অত্যাচারিত বিএনপি’র নেতাকর্মীদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছেন।
এসময় জেলা বিএনপি’র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া, জেলা ছাত্র দলের সভাপতি মারুফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহম্মেদ নেভিন উপস্থিত ছিলেন।