স্টাফ রিপোর্টারঃ
গত শনিবার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়েছে কিশোরগঞ্জ হাওরের সবকটি নদী ও খালে। এতে হাওরের নদী ও খাল সংলগ্ন নিচু এলাকার আধাপাকা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিতে ধান কাটতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা দিনমজুর না পাওয়ায় পরিবারের সকলেই মিলে পানির নিচ থেকে একমাত্র বোরো ফসল তুলে আনার চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত মূল হাওরে পানি না ঢুকলেও শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক।
এখন পর্যন্ত পানির নিচে চলে গিয়েছে ৩৫০ শত একর বোরো ফসলের জমি। একমাত্র বোরো ফসল বিনষ্ট হওয়ায় কৃষকদের মাঝে হাহাকার বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও দুই তিন ফুট পানির নিচে চলে গেছে এসব ধানের জমি। অপরিপক্ক এসব ধান কাটতে শ্রমিক না পাওয়ায় পরিবারের সকলেই মিলে পানির নিচ থেকে ফসল তুলে আনার চেষ্টা করছেন। নিচু এলাকা প্লাবিত হলেও মূল হাওরে এখনও পানি ঢুকতে পারেনি। তবে কোনো কোনো জায়গায় দুর্বল বাঁধ থাকায় ফসল হানির চরম আতঙ্কে রয়েছেন কৃষক। বাঁধ ঠিক রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাশপাশি দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন হাওর এলাকার কৃষক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। প্রতিদিনই বাড়ছে হাওরের নদ নদীতে পানি। নতুন নতুন নিচু এলাকায় পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে বোরো ফসল। ধার দেনা করে আবাদ করা একমাত্র বোরো ফসল বিনষ্ট হওয়ায় আগামী দিনগুলো কিভাবে চলবে, সে চিন্তায় অস্থির কৃষক পরিবার।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলার করিমগঞ্জ, তাড়াইল, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, বাজিতপুর ও ভৈরব উপজেলায় মোট ৯৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মান করা হয়েছে। ফসল রক্ষার বাঁধগুলো এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাঁধ ঠিক রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কাজ করছেন। হাওরে ফসল রক্ষার মূল বাঁধের পাশাপাশি আলাদা ভাবে আরও বাঁধ তৈরী করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল আলম বলেন, পাহাড়ি ঢলে হাওরে ২ শত ৬২ হেক্টর বোরো জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে এ বছর কিশোরগঞ্জের হাওরে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। মূল হাওরে পানি না ঢুকলেও আশঙ্কাজনক থাকায় ৮০ পার্সেন্ট পেকে যাওয়া ধান কাটার পরার্মশ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের।