নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে গৃহবধূ রুবা আক্তার (১৮) হত্যা মামলায় ৬জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।
আজ সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। নিহত গৃহবধূ রুবা আক্তার করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া মোড়লপাড়া এলাকার মৃত আবুবক্কর সিদ্দিকী এর মেয়ে।
যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত আসামিরা হল, করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া মোড়লপাড়ার মো. তাহেরের ছেলে লুৎতু (৩০), মৃত মীর হোসেনের ছেলে মো. সোহরাব (৪৫), তার ছেলে মো. শরিফ (২২) ও স্ত্রী মোছা. জোসনা (৪০) এবং মৃত ফালু মিয়ার ছেলে মুসলিম (৫৫) তার স্ত্রী নূর নাহার (৪০)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালে মে মাসের দিকে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া মোড়লপাড়া গ্রামে আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. শামীম এর সাথে দাদা দাদীর অসিয়তে বিবাহ হয় একই গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকী এর মেয়ে রুবা আক্তারের।
প্রথমে স্বামী শামীম ও তার দুই চাচা সোরাব ও মুসলিম এ বিয়েতে রাজি ছিলেননা। পরে শামীমের দাদা দাদীর অসিয়ত রক্ষায় রুবাকে বিবাহ করেন শামীম। বিয়ের আনুমানিক ১৫ দিন পর একই বছরের জুন মাসের ৩ তারিখে শামীম তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে খবর দেয় তার স্ত্রী রুবা ঘরে নেই।
রুবার নিখোঁজের খবর পেয়ে সাথে সাথে রুবার বড় ভাই আলামিন রুবাকে খোঁজতে শামীমদের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে রুবাকে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। রাত পৌনে দুইটার দিকে শামীমের বাড়ির পাশের ডোবায় শামীমের চাচতো ভাই লুৎতু, শরীফ ও চাচা সোরাব রুবার লাশ দেখতে পেয়ে লাশ উদ্ধার করে শামীমের বাড়িতে নিয়ে আসে।
ধারনা করা হচ্ছে ওই দিন রাতের যে কোনো সময় রুবাকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দ্যেশে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে রাখা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে করিমগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনার একদিন পর ৪ জুন নিহত গৃহবধূ রুবা আক্তারের বড় ভাই মো. আলামিন বাদী হয়ে রুবার স্বামী মো. শামীমসহ ৭জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন করিমগঞ্জ থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খোন্দকার শওকত জাহান ৬জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহজাহান এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট অশোক সরকার মামলাটি পরিচালনা করেন।