কিশোরগঞ্জে চোরাই চিনি চালানের মামলায় ছাত্র লীগ নেতা গ্রেফতার

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সহসভাপতি নাজমুল হোসেন হীরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা নিয়ে আসা হয়।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, চোরাই চিনি চালানের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জানা যায়, নাজমুল হোসেন হীরাকে প্রধান আসামি করে কিশোরগঞ্জ আমলী আদালত নং-১ এ পর্নগ্রাফি আইনে এক তরুণী মামলা দায়ের করেছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানাকে এফআইআর এর নির্দেশ দিয়েছে। রবিবার (২৪ জুন) দুপুরে মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই মামলায় জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি অভিযুক্ত নাজমুল হোসেন হীরার মামা আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও তার বড় ভাই জেলা ছাত্র লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন মোল্লা বাবুলকে আসামি করা হয়েছে। ভুক্তভোগি ওই তরুনী কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার বাসিন্দা।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই তরুণী কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী। বাড়ি হাওরে হওয়ায় কলেজের কাছে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কলেজে যাওয়া আসার পথে সভাপতির ভাগ্নে হিরা পথরোধ করে প্রায় সময় প্রেম নিবেদন করতেন। একপর্যায়ে রাজি না হওয়ায় হিরা ভয় দেখায় আমার মামা মোল্লা সুমন জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি। এই ভয় দেখিয়ে কলেজে যাওয়া আসার পথবন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দেয়। এরপর হিরার সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সর্ম্পক হয়। যা অভিযুক্ত হিরা তার মোবাইল ফোনের মধ্যে স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারন করে রাখে। এভাবে অনেকদিন অতিবাহিত হলে মামলায় অভিযুক্ত সভাপতি মোল্লা সুমন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাবুলকে ফোনে বিষয়টি জানালে তারা তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে কিশোরগঞ্জ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এই সুযোগে হিরা শারীরিক মিলামেশা অব্যাহ রাখে।

এরপর বিষয়টি মানতে না পেরে আবারও চাপ সৃষ্টি করলে সিরাজ কাজীর মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৮ জুন রেজিষ্ট্রি করে কিন্তু কাবিনের কোন কপি তাকে দেওয়া হয়নি। এরপর জানতে পারেন হিরা এর আগেও বিয়ে করেছেন এবং তার দুইটি সন্তান ছিল পরবর্তিতে তারা মারা যায়। বিষয়টি যেনে তার কাছে হিরার সম্পর্কে নৈতিক চরিত্র অনেক আগে থেকেই খারাপ বলে মনে হয়। মামা ছাত্র লীগের সভাপতি হওয়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে হিরা। প্রায় সময় তার বাসায় বিভিন্ন মেয়ে নিয়ে শারীরিক সর্ম্পকে জড়ায়।

ভুক্তভোগী তরুনী সহ্য করতে না পেরে হিরাকে মৌখিকভাবে তালাক দিয়ে দূরে সরে যায়। এতেই ঘটে বিপত্তি হিরা তার মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে দুই বারে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেই। আর এ ঘটনায় ভয়ভীতি দেখায় সভাপতি মোল্লা সুমন ও তার ভাই মোল্লা বাবুল। শুধু তাই নয়, টাকা দিয়ে হিরার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ক্রয় করে। পরবর্তিতে নগ্ন ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোল্লা সুমন একটি আইফোন ও স্যামসাং মোবাইল নেয়। মোল্লা বাবুলও একই কৌশলে তিন লাখ টাকা নিয়ে মোটর সাইকেল ক্রয় করে। তাতেও থেমে যায়নি অভিযুক্তরা একের পর এক ভয় দেখিয়ে সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল হিরা আবারও শারীরিক সর্ম্পক করে ভিডিও ধারণ করে। তাদের ক্ষমতায় শেষ পর্যন্ত আর ঠিকতে পারেনি ভুক্তভোগী ওই নারী। অভিযুক্তদের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় ধারণকৃত সকল ভিডিও, স্থিরচিত্র ও অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বর্তমানে অসহায় হয়ে সর্বশেষ আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।

Share.