সোমবার সাতই নভেম্বরের কর্মসূচি পালনের সময় হামলা ও জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করে দায়িত্ব পালনে বাঁধার অভিযোগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি মো: খসরুজ্জামান শরীফ ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ আহমেদসহ ১৯ জন চিহ্নিত এবং ৬০/৭০ জন অজ্ঞাত পরিচয়ের নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে এ মামলায় পুলিশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের সুমন ও সাঈদুল ইসলাম নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, ৭ নভেম্বর উপলক্ষে সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আলোচনা সভা এবং সমাবেশের আয়োজন করে। ১২ টার দিকে জেলা যুবদলের সমাবেশ পূর্ব একটি মিছিল শহরের রথখোলা এলাকা থেকে স্টেশন রোড এলাকায় অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ের দিকে রওয়ানা হয়। মিছিলটি জেলা বিএনপি কার্যালয়ের কাছাকাছি আসলে পুলিশ পথরোধ করে দাঁড়ায়। এ সময় কথা-কাটাকাটি থেকে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়ে ধরাও-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় লাঠিচার্জে ও গুলিবিদ্ধ হয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি মো: খসরুজ্জামান শরীফসহ অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়। এক-ই সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়। এদের মধ্যে জেলা যুবদলের সভাপতি মো: খসরুজ্জামান শরীফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর পর তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: মাজহারুল ইসলাম দাবি করেন, পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালিয়ে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
অপরদিকে, একই সময় কিশোরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আল আমিন হোসেন দাবি করেন, মিছিলকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অরাজকতা, নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এ হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় বেশ ক’জন পুলিশ সদস্যও আহত হয় বলে দাবি করেন তিনি।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ জানান, সোমবার ৭ নভেম্বরের হামলা-অরাজকতা সৃষ্টি এবং পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাঁধা ও আহত করার ঘটনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবদলের সভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯ জন চিহ্নিত এবং ৭০ জন অজ্ঞাত পরিচয়ের নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে। এ মামলায় ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অনিল কুমার এ মামলা রুজু করেন বলেও জানিয়েছেন ওসি।