স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার আগেই কৃষক যেন তাদের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষকের দান কেটে ঘরে পৌঁছে দিতে কৃষক লীগের নেতাকর্মীরে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গেরাজুর হাওরে কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ দিতে ধান কাটা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন। এসময় কৃষক রমজান মিয়ার এক একর পাকা দান কেটে দেন কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা।
সমীর চন্দ বলেন, হাওরের ধান কাটতে যেন কোনও ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার আগেই কৃষক যেন তাদের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারে কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের এই ব্যবস্থা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা কৃষকলীগের প্রতিটি সদস্য গতবারের ধারবাহিকতায় এবারও হাওর এলাকার কৃষকের বন্ধু হিসাবে ধান কেটে গোলায় তুলে দিচ্ছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ ও কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে কৃষকলীগ। যতদিন হাওরের ধান কাটা শেষ না হবে ততদিন কৃষকলীগের প্রতিটি সদস্য হাওরে ধান কাটার দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, এবার ব্রি-২৮ ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেই বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী ভালোভাবে জানেন। ব্রি-২৮ ধানের পরিবর্তে উন্নত মানের বঙ্গবন্ধু ১০০ ধানের আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। উন্নতজাতের ধানগুলো আবাদ করলে আর ভাইরাসে ক্ষতি করতে পারবে না। কৃষকদেরকে সেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এসময় কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, কৃষিবিদ ডাক্তার নজরুল ইসলাম, মোঃ আবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী জসিম উদ্দিন, আসাদুজ্জামান বিপ্লব, ড. হাবিবুর রহমান মোল্লা, সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সহ-দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব সৈয়দ শওকত হোসেন সানু, কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ হানিফ, দপ্তর সম্পাদক বাবু দীপক দাস, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম হেভেন, করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম, শহর কৃষক লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আল মামুনসহ জেলা ও উপজেলা কৃষকলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক রমজান মিয়া বলেন, বর্তমানে হাওরে ধানকাটার ধুম লেগেছে। তাই শ্রমিকের দাম বেশি। যেখানে ধানের মূল্য মন প্রতি ৮০০টাকা সেখানে শ্রমিকের মূল্য ১ হাজার টাকা। আজকে কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা আমার এক একর জমরি ধান কেটে দিয়েছেন। আমার অনেক উপকার হয়েছে। তাই আমি কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাই।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত হাওরের মোট ৭০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হাওরে ও হাওরের বাইরের সব ধান কাটা শেষ হবে। চলতি বছর জেলার ১৩ উপজেলায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। তাতে অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ২৯০ হেক্টর। জেলার হাওরাঞ্চলে বোরোধান চাষ হয়েছে এক লাখ তিন হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে।