নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সন্ত্রাসবাদ, জামাত শিবির, ৭১ ও ৭৫ সালের খুনিদের আশ্রয়স্থল বিএনপি। তাদের হাতে এ দেশ কোনদিন নিরাপদ নয়। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকারী জিয়াউর রহমান। এ দেশে একটি মাত্র পরিবার যারা সকলেই খুনি বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
আজ (বুধবার) সকালে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দুইদিন ব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা ও ৩রা নভেম্বর রাতে জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করে বাংলাদেশকে চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। বর্তমানে জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরি তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০৪ সালে ক্ষমতায় থেকে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তার ছেলে তারেক রহমানও তার বাবা ও মায়ের মতো হামলায় সহযোগিতা করে সেদিন আওয়ামী লীগ নেত্রী কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মীনি বেগম আইভী রহমানসহ ২৪জনকে হত্যা করে। আর সেই হত্যাকান্ডের রক্ত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের গায়ে মিশানো। এই একটি পরিবারের ধারাবাহিক ইতিহাসে দেখা যায় পিতা-মাতা ও সন্তান সবাই হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
কে এম খালিদ বলেন, জিয়াউর রহমান কখনও স্বাধীনতার ঘোষক হতে পারেন না। তিনি পাঠক, ঘোষক নন। আজকে তারা মিথ্যাচার করে পাঠককে ঘোষক বানাতে চায়। বিএপি সরকার ক্ষমতায় আসলে এই বংলাদেশ আর শান্তিতে থাকবে না। তারা সন্ত্রাসী। ২০১৪ সাল তার স্বাক্ষী। সারাদেশে জ¦ালিয়ে পুড়িয়ে সব শেষ করে দিয়েছে। তাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনার আর কোন সুযোগ নেই।
কবি সাহিত্যিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার তৃণমূলের কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সারা বাংলাদেশে সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নভেম্বর মাসে ৩০টি জেলায় ও আগামি ডিসেম্বর মাসে ৩৪ টি জেলায় সাহিত্য মেলা শেষে জাতীয় ভাবে সাহিত্য মেলার আয়োজন করার প্রক্রিয়া চলছে। এ দেশের কবি সাহিত্যিকরা সবসময় স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছে। যখনই গণতন্ত্র সংকটে পড়েছে শিল্পী-সাহিত্যিকরা এগিয়ে এসেছে। শিল্পী-সাহিত্যিকরা গণতন্ত্র উদ্ধারে সবচেয়ে বড় রুপকার। তাদের লেখালেখির মাধ্যমে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তি সংগ্রামে এদেশের মানুষদের সবসময় সাহস যুগিয়েছে। ভবিষ্যতেও সকল সংগ্রামে তাদের ভূমিকা থাকবে। পরে বাংলা একাডেমির সমন্বয়ে ও সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকাতায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাহিত্য মেলার বইয়ের স্টল পরিদর্শন করেন তিনি।
উপস্থিত সাহিত্যিকদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে বেলুন-পায়রা ও ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে সাহিত্যমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। প্রথমবারের মতো কিশোরগঞ্জে আয়োজিত এ সাহিত্য মেলাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই মুখরিত ছিল জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। মেলাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মত। আলোচনাসভা, প্রবন্ধ পাঠ, লেখক কর্মশালা, সাহিত্য পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হবে এই সাহিত্য মেলা।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজলসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কবি সাহিত্যিকগণ।