স্টাফ রিপোর্টারঃ
৩ মাস ১৪ দিন পর খোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্ধুক। সিন্ধুক থেকে এবার ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৭ টায় ১১ টি সিন্ধুক খোলা হয়। পরে গণনার জন্য বস্তায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে সেখানে চলছে গণনা। দিনভর গননা শেষে সন্ধ্যায় দানের পরিমান জানা যাবে। টাকা ছাড়াও স্বর্ণ, রুপাসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে। প্রতি তিন মাস পর সিন্ধু খোলা হলেও এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর খোলা হয়েছে।
দান সিন্ধুক খোলার সময় জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের সেনাবাহিনী সার্জেন্ট বিপ্লব, জেলা প্রশাসনের ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ জন সেনা সদস্য, ১৭ জন পুলিশ সদস্য, ৯ জন আনসার সদস্য, পাগলা মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান জানান, গণনায় মাদ্রাসার ২৮২ জন শিক্ষার্থী, ৩৬ জন শিক্ষক ও স্টাফ,৭৫ জন ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশগ্রহণ করেছে।
অবাক করার বিষয়, পাগলা মসজিদের দান সিন্ধুক থেকে টাকা, স্বর্ণ, রুপা, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও আল্লাহর কাছে মনবাসনা পূরণে চিঠি লিখে থাকেন অনেকেই। চিঠিতে পরিবার-পরিজন, শত্রুদের বস করা, প্রচুর অর্থের মালিক হওয়া, মনের মানুষকে কাছে পাওয়া, পরিবারের অশান্তি দূর হওয়া, স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে মিল থাকা, অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করা, বিদেশে যেতে চাওয়ার আকাঙ্কাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। এবারও এমন বেশ কিছু চিঠি পাওয়া গেছে।
তথ্য মতে সর্বশেষ, পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া দানবাক্স থেকে স্বর্ণ, রুপাসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে। গত ১৭ আগস্ট সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনা শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে টাকার পরিমাণ জানা যায়।
উল্লেখ্য, তিন মাস ২৬ দিন পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টায় মসজিদের ৯টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়। যেখানে জেলা প্রশাসনের ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৩০ জন সেনা সদস্য, ১৫ জন পুলিশ সদস্য ও ৯ জন আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ২৮টি বস্তায় টাকা ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেজেতে ঢেলে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় গণনা কার্যক্রম। গণনায় ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী, মাদ্রাসার ২৪৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।