আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
‘এই করিম (ছদ্মনাম) ভাই আছে? আছে। এবার ভোটে জিতবে কে? করিম ভাই ছাড়া আর কে। রাস্তা ভালা। কুইট্টা ফালা।’ তপ্ত রোদে গলা ফাটিয়ে ও বাঁশি বাঁজিয়ে এভাবেই শ্লোগান দিচ্ছিলো একদল, সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী নয় বা ভোটারও নয়। কেবল একদল কোমলমতি শিশু। যাদের সবার বয়স ১০-১২বছর। কিংবা তারও নিচে।
ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আগামি ৩১জানুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আজ সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা শোভাযাত্রা নিয়ে নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসে। এসব শোভাযাত্রায় জনসমর্থন বেশি দেখাতে বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। গলা ফাটিয়ে ভুভুজেলা বাঁশি বাজিয়ে হুইহুল্লোড় করতে দেখা গেছে তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রার্থী বিশাল নির্বাচনী শোভাযাত্রা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। এতে বিভিন্ন বয়সের মানুষের সঙ্গে অটোরিকশা ও পিকআপে করে প্রায় শতাধিক শিশু আসে। সবার হাতেই রঙ-বেরঙের প্লাস্টিকের বাঁশি বাজিয়ে তারা হুইহুল্লোড় করছে। মাঝে মধ্যে আবার নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীর পক্ষে শ্লোগানও দিচ্ছে।
তবে নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুদের অংশগ্রহণ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন একাধিক প্রার্থী। তারা বলেন, শিশুরা মনের আনন্দে হয়তো আসতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের ডাকা হয়নি। তাছাড়া অনেকেই তাদের ভাই, বাবা-চাচা বা প্রতিবেশির সঙ্গে হয়তো চলে এসেছে।
শোভাযাত্রায় আসা কয়েকজন শিশু জানায়, বাঁশি উপহার দেওয়ায় ও জিলেপি খাওয়ানোয় আমরা মিছিলে এসেছি। মিছিলে এসে ভালই লাগছে। সবার সঙ্গে বেশ আনন্দ-ফূর্তি করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, শিশুরা স্বেচ্ছায় মনের আনন্দে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। আমরা তাদের আসতে বলিনি।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম বলেন, নির্বাচনী কাজে শিশুদের ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন আইনে কিছু বলা নেই। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুদের অংশগ্রহণ করা ঠিক নয়।