খাইরুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ) হোসেনপুরঃ
১৩ বছরের কিশোরী সাথী আক্তার।কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জামাইল গ্রামের কামাল হোসেনের মেয়ে।তার যেন দুঃখের শেষ নেই। ছোট থাকতেই তার বাবা তাকে আর তার মাকে ছেড়ে চলে যান। পরে, মায়ের পরম মমতায় বড় হতে থাকে সে। মানসিক ভারসাম্যহীন হয়েও মা তার মেয়েকে ছাড়া কিছুই বুঝতো না। মেয়েকে নিয়ে দিন রাত উপজেলার বিভিন্ন সড়কে হাঁটাহাঁটি করাই ছিলো মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের একমাত্র নেশা।
তারপর একদিন দুঃখের আধাঁর নেমে আসে সাথীর জীবনে প্রতিদিনের মতো সকালে মেয়েকে নিয়ে হাঁটতে বের হলে পূর্ব দ্বীপেশ্বর এলাকার কিশোরগঞ্জ-ভালুকা সড়ক পার হতে গেলে কিশোরগঞ্জের দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যান তাদের চাপা দেয়। এতে তারা গুরুত্বর আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মা সুফিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন৷
এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে পড়েন সাথী। কে বহন করবে তার চিকিৎসার খরচ! হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। ঠিক তখনই উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পাশে দাড়াঁয় উপজেলা প্রশাসন।
সুস্থ হয়ে শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন। তার আশ্রয় জুটে বীর পাইশকার আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি ঘরে। মাকে হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করা সেই এতিম কিশোরী সাথী আক্তারের পাশে দাড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মন্ডল।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সাথী আক্তারকে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাথী তার হাতে একটি সেলাই মেশিন তুলে দেন ইউএনও অনিন্দ্য মন্ডল। সেলাই মেশিন পেয়ে যেন সাথীর আনন্দের সীমা নেই। সে বলেন, আশ্রয়নের প্রকল্পের একটি ঘরে আমি থাকছি। সেলাই মেশিনটি দিয়ে আমি অর্থ উপার্জন করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, সাথীকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে তার হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন তার পাশে আছে।