নৌকা পেতে পাকুন্দিয়ার আট মাঝি এখন ঢাকায়

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
সপ্তম ধাপের পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভায় অনেকটাই নিরুত্তাপ পরিবেশ বিরাজ করছে। বেশ কিছুদিন এলাকায় আগাম গণসংযোগ ও শোডাউন শেষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়ে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক আনার জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সবাই বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা নানাভাবে তদবির করে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন ও নৌকা প্রতীক পাওয়ার আশায় আগাম গণসংযোগে নামেন দলের অন্তত আটজন নেতা। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক মোতায়েম হোসেন স্বপন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মিছবাহ উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বাবুল আহমেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্মআহ্বায়ক মো. ফরিদ উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একেএম হাবিবুর রহমান চুন্নু, পাকুন্দিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম আকন্দ ও উপজেলা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ।

নির্বাচন কমিশনের পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু করে জেলা আওয়ামীলীগ। শনিবার (২অক্টোবর) ছিলো আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। শনিবার পর্যন্ত জমা হওয়া আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে পরের দিন রবিবার সম্ভাব্য সব প্রার্থীর নামই কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে জেলা আওয়ামীলীগ। এরপর থেকেই দলের নৌকা প্রতীক আনার জন্য সব মেয়র পদপ্রার্থীই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা বিভিন্ন কৌশলে যার যার লিংক ধরে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। তারা চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের ম্যানেজ করে নৌকা প্রতীক নিয়ে বাড়ি ফেরার।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো.হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা যে যার মতো করে মাঠে কাজ করছেন। দলীয় প্রতীক আনার জন্য যার যার লিংক ধরে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে নৌকাকে বিজয়ী করার লক্ষে নেতাকর্মীরা সবাই মাঠে নেমে কাজ করবেন।

এদিকে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো বহাল আছে। তাই বিএনপির নেতারা নির্বাচন নিয়ে নিরব ভূমিকায় রয়েছেন। তবে পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মো.জালাল উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে স্থানীয় বিএনপির একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এসএএম মিনহাজ উদ্দিন বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তবে দলের হাইকমান্ডের মৌখিক অনুমতি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। অপর দিকে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান খোকন তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবারও নির্বাচন করার লক্ষে প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নারিকেল গাছ মার্কায় নির্বাচন করে পাশ করেছিলেন। একারণে দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হলেও পাশ করার পর অবশ্য বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।

উল্লেখ্য, পাকুন্দিয়া পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ২৩হাজার ১৩০জন। তফসিল অনুযায়ী সপ্তম ধাপের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৯অক্টোবর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১১অক্টোবর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপীল ১২-১৪অক্টোবর, আপীল নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ১৬অক্টোবর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮অক্টোবর। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামি দুই নভেম্বর।

Share.