আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাতের আঁধারে দোকানঘর ভাঙচুর ও দুইলাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে জমি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার সৈয়দগাওঁ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার দুপুরে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিন-চার জনকে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সৈয়দগাওঁ গ্রামের ভুক্তভোগী জেবুন্নাহার নামের এক নারী।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার সৈয়দগাওঁ গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে দুলাল মিয়া ও তাঁর ছেলে উজ্জল মিয়া, সজল মিয়া ও কাজল মিয়া, সায়েম উদ্দিনের ছেলে মিলন মিয়া ও সুমন মিয়া।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সৈয়দগাওঁ মৌজায় ভুক্তভোগী জেবুন্নাহার এবং তাঁর বোন ইয়াসমিন নাহার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া আর এস ৩৩৭ নং খতিয়ানের ১১৩২ নং দাগের ১৩ শতক জমির মালিক। দীর্ঘ দিন ধরে ওই জমির পূর্ব পাশে একটি আধাপাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে বিভিন্ন পণ্যের স্টক ব্যবসা করে আসছেন জেবুন্নাহার। জমির অন্য অংশে কলাগাছ রোপণ করে ভোগ দখল করছেন। আর্থিক প্রয়োজনে জেবুন্নাহার গত ২৬ জানুয়ারি ওই ১৩ শতক জমির উত্তর পাশ থেকে ৬ শতক জমি বিক্রি করেন একই গ্রামের সায়েম উদ্দিনের ছেলে শরীফ মিয়ার কাছে। দলিল নম্বর ৪০৮। কিন্তু জমি ক্রেতা শরীফ মিয়া দলিল লেখকের সহায়তায় গোপনে দলিলে জমির উত্তর পাশ উল্লেখ না করে পূর্ব পাশ উল্লেখ করে জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালান। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী জেবুন্নাহার গত ৯ মে কিশোরগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেন। আদালত প্রতিপক্ষের আপত্তি দাখিল ও শুনানি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী ভূমিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে জমি ক্রেতা শরীফের দুই ভাই মিলন ও সুমনের নেতৃত্বে ৮-১০ জন দুর্বৃত্ত ওই দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় দোকানে থাকা ৫০ বস্তা ধান, ৩০টি এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ও ২০টি গ্যাসের চুলা লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার ও আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী জেবুন্নাহারের স্বামী খুরশীদ উদ্দিন বলেন, বিবাদিরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আধাঁরে আমাদের দোকানঘর ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় দোকানে থাকা ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার বিভিন্ন মালামাল লুট করে একটি টমটমে তুলে নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে রাতেই আমরা সেখানে গিয়ে এর প্রতিবাদ করলে তাঁরা আমাদের গুম ও খুনসহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় গতকাল রাতে পাকুন্দিয়া থানায় বিবাদিদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
জমি ক্রেতা শরীফ মিয়াকে পাওয়া যায়নি তবে তাঁর ভাই অভিযুক্ত মিলন মিয়া বলেন, আমি আজ সকাল (শনিবার) দশটার দিকে গিয়ে দেখেছি রাতে কে বা কারা দোকানটি ভাঙচুর করেছে। তবে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
পাকুন্দিয়া থানার উপপরিদর্শক(এস আই) মোঃ আমিনুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।