আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মো. ইসমাইল হোসেন (৪০) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গোলাম রাব্বি (২০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার বিকেলে ওই আসামী আদালতে স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রেস বিফিংয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. সারোয়ার জাহান।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামী গোলাম রাব্বী উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের চরখামা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং স্থানীয় হাজী জাফর আলী কলেজের এইচএসসি মানবিক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, নিহত ইসমাইল হোসেনের বাড়ি একই এলাকায়। তার বাবার নাম নিলু মিয়া। তিনি এলাকায় ঘুরে ঘুরে শিল পাটা খোদাইয়ের কাজ করতেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চরখামা এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহের পাশেই পড়েছিল ঘুমের বড়ির একটি খালি পাতা ও কোকাকোলার একটি খালি বোতল।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ওই দিনই নিহতের বোন আছমা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা করেন। হত্যাকান্ডের পর থেকেই পুলিশ বিভিন্ন ভাবে বিষয়টি তদন্ত করে আসছিলেন। পরিশেষে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসামী গোলাম রাব্বী ও নিহত ইসমাইল হোসেনের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই কাজ করে আসছিলেন। আর এ কাজে গোলাম রাব্বিকে উদ্বোদ্ধ করেন নিহত ইসমাইল হোসেন। কিন্তু এ কাজ করতে রাজি ছিলেন না গোলাম রাব্বি। ফলে এর বিনিময়ে গোলাম রাব্বীকে টাকা দিতেন ইসমাইল। ইসমাইলের এ কার্যকলাপে ক্ষুদ্ধ ছিলেন গোলাম রাব্বী। তাই এ কাজ থেকে রক্ষা পেতে ইসমাইলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গোলাম রাব্বী। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে সমকামিতার কথা বলে ইসমাইলকে মুঠোফোনে ডেকে আলিয়াল খাঁ নদীর তীরে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর কৌশলে কোকাকোলার সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে ইসমাইলকে খাওয়ায় গোলাম রাব্বী। পরে ইসমাইল ঘুমিয়ে পড়লে তাঁর গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় গোলাম রাব্বী।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার রহস্যটি উদঘাটন করতে সক্ষম হই। আসামী গোলাম রাব্বী ইসমাইলকে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছেন। শুক্রবার বিকেলে আসামী গোলাম রাব্বী আদালতে স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান তিনি।