আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
ঘুর্ণিঝড় রিমালের পর চারদিন পেরিয়ে গেলেও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়নি। পাকুন্দিয়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আওতায় প্রায় ৭৪ হাজার গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ পাননি। এতে জনজীবনে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। ফলে রান্নাবান্না, পড়াশোনাসহ টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিসেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ অফিস বলছে, প্রচন্ড ঝড়ের কারণে অনেক জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পড়ায় এবং গাছপালা পড়ে তার ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গত রবিবার থেকে উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। ফলে জনজীবন অসহনীয় হয়ে ওঠেছে। নানামুখী সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে রান্নাবান্না বন্ধ, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বন্ধ, ফ্রিজ বন্ধ, মোবাইল বন্ধ, ইন্টারনেট বন্ধ, অসহনীয় গরমে রাতে ঘুমানো যাচ্ছে না।
উপজেলার এগারোসিন্দুর গ্রামের বাসিন্দা আলামিন বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ ছাড়া চলা সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় গত রবিবার থেকে কোন বিদ্যুৎ নেই। ফলে ফ্রিজ গলে পানি পড়ছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। রাইস কুকারে ভাত রান্না বন্ধ। ফ্যান ঘুরে না। অসহনীয় গরমে রাতে ঘুমাতে পারছিনা। আমরা গত চারদিন ধরে একেবারে অন্ধকারে আছি। এত দূর্বিষহ জীবন কাটছে যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা।
পাকুন্দিয়া পৌর সদরের বাসিন্দা বুলবুল মিয়া বলেন, বিদ্যুতের অভাবে এলাকার মসজিদগুলোতেও অজুর পানি নেই। ফ্রিজের খাবার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও খাওয়ার সময় কেরোসিনের বাতি জালাতে হচ্ছে। পৌরসদরের অটোরিক্সা চালক রুবেল মিয়া বলেন, আমরা রাতে গাড়ি চার্জ করি আর দিনের বেলায় চালায়। গত চারদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় অটোরিক্সাটি চার্জ করতে পারিনি। অটোরিক্সা চালানো বন্ধ থাকায় খুবই আর্থিক সংকটে পড়েছি।
পাকুন্দিয়া পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম শহীদুল আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা সোমবার সকাল থেকেই এসকল সমস্যা সমাধানের জন্য বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছি। মঙ্গলবার থেকেই কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আজকের মধ্যেই (বৃহস্পতিবার) বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।