পাকুন্দিয়ায় ফুবটল খেলোয়ারকে মেরে জখম, সহপাঠিদের সড়ক অবরোধ

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মেহেদী হাসান মাইন নামের এক ফুটবল খেলোয়ারকে বুটের আঘাতে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে পাকুন্দিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন খেলোয়ারের বিরুদ্ধে। আজ রবিবার দুপুরে পাকুন্দিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৪৯তম জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফুটবল খেলার ফাইনাল ম্যাচ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। আহত মাইন উপজেলার কালিয়াচাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি উপজেলার জুনাইল গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচারের দাবীতে বেলা ২টার দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কে প্রতিবাদ ও অবরোধ কর্মসূচী পালন করে কালিয়াচাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আহত শিক্ষার্থী মাইন কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে পাকুন্দিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় এবং কালিয়াচাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৯তম জাতীয় স্কুল গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল খেলা চলছিল। প্রথমার্ধে দুই পক্ষই ১-১ গোলে সমঝোতায় ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের সময় পাকুন্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন খেলোয়ার উত্তেজিত হয়ে মাঠের মধ্যেই মেহেদী হাসান মাইনের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। এতে মেহেদী হাসান মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় কয়েকজন খেলোয়ার বুট দিয়ে এলোপাথারী লাথি মেরে মাইনের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ গুরুতর জখম করে। পরে পুরো মাঠ জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সহপাঠিরা তাকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়।

পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহেরুন্নেছা তমা বলেন, তার পুরো শরীর ও মাথায় অসংখ্য বুটের আঘাত পাওয়া গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী হিজলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, কালিয়াচাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়ার মাইন ডিফেন্ডার হিসাবে খুব ভালো খেলছিল। তার জন্য পাকুন্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়াররা গোল দিতে পারছিল না। তাই উত্তেজিত হয়ে কয়েজন খেলোয়ার তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করে।

কালিয়াচাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, অন্যায় ভাবে মেহেদী হাসানের ওপর বুট দিয়ে এলোপাথারী লাথিয়ে পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত করেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে এর উপযুক্ত বিচার দাবী করছি।

পাকুন্দিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফসার উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এসএসসি পরীক্ষার কাজে আমি এখন ঢাকায় আছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম সাইফুল আলম বলেন, এটি একটি অনাকাঙিখত ঘটনা। আমি মাঠে থেকে পুরো বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। ক্রীড়া কমিটি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আজকের এ খেলাটি বাতিল করা হয়েছে।

ক্রীড়া কমিটির সভাপতি পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর বিচার করা হবে। পাকুন্দিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভবিষ্যতে যাতে আর কোন ফুটবল খেলা হতে না পারে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.