আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আলমদী গ্রামের শাহজাহান ও আমিনুল হকের বাড়িঘরে হামলা-ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। এসময় বাধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষের হামলায় দুইজন নারী আহত হন। আহতরা হলেন, শাহজাহানের স্ত্রী রাবিয়া খাতুন ও আমিনুল হকের স্ত্রী রেখা আক্তার। হামলায় বসতঘরসহ আসবাবপত্র হারিয়ে আমিনুল হকের পরিবারের শিশু ও নারীরা গত নয় দিন ধরে অন্যের বাড়ি বসবাস করছেন। গত ৮ এপ্রিল রাতের এ ঘটনায় শাহজাহানের স্ত্রী রাবেয়া বাদি হয়ে কিশোরগঞ্জ আমলি আদালতে গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ এ বিষয়ে কোন প্রদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ বাদিপক্ষের।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বুরুদিয়া ইউনিয়নের মোল্লাদি গ্রামের মৃত জোয়াদ হোসেনের ছেলে এনামুল ও তার লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আলমদী গ্রামের মৃত নজম উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান ও আমিনুল হকের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা চারটি ঘর ব্যাপক ভাংচুর করে। এছাড়াও ঘরের ভেতরে ঢুকে যাবতীয় আসবাসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে ঘরের স্টিলের আলমারি ও সুকেস ভেঙে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা শাহজাহানের স্ত্রী রাবেয়াকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় হামলায় আহত দুইজনকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। পাঁচদিন চিকিৎসা শেষে তারা বাড়ি ফিরেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত রাবেয়া খাতুন বলেন, এনামুল, বাবুল ও জসিমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের চারটি ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এসময় সন্ত্রাসীরা ঘর থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মূল্যবান কাগজপত্র ও সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারী লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও ঘরের ভেতরে খাট ও চৌকিসহ যাবতীয় আসবাবপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, আমি নিরুপায় হয়ে এখন পোলাপাইনদের নিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকি। সামনে ঈদ আসছে। তবুও বাড়িতে যাওয়ার কোন পরিবেশ নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত রেখা আক্তার বলেন, ওরা আমাদের নিরীহ পেয়ে কয়েকদিন পরপর আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এর আগেও গত ১৮ মার্চ দুপুরে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় আলমারি ও সুকেস ভেঙে নগদ ২ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল লুট করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের কাছ থেকে কোন রকম সহযোগিতা আমরা পাইনি। আমরা এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পাকুন্দিয়া থানাধীন আহুতিয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, দুই-তিন আগে আদালত থেকে মামলার নথি পেয়েছি। অতিদ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানো হবে।