পাকুন্দিয়ায় বাড়ি-ঘর ভাংচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার উত্তর সাটিয়াদী গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারধর ও বাড়ি-ঘর ভাংচুরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালের ঘটনায় ওই দিন রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল আলমসহ (২৫) সাতজনের নাম উল্লেখ করে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত আলহাজ উদ্দিনের স্ত্রী ইতি আক্তার।

অভিযুক্ত নাজমুল আলম পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ওই গ্রামের আহম্মদ আলী ভূঁইয়ার ছেলে। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন, নাজমুলের বড়ভাই আশরাফ উদ্দিন (৫৫) ও তার ছেলে রনি মিয়া (২৫), একই এলাকার জুয়েল মিয়া (৪৫), আঃ রহমান (২৫), রাজিব মিয়া (৩৫) ও তানভীর মিয়া (২৪)।

এলাকাবাসী ও থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর সাটিয়াদী গ্রামে পাটুয়াভাঙ্গা মৌজায় ৪৬ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে পাশের বাড়ির নাজমুল আলমের পরিবারের সঙ্গে আলহাজ উদ্দিনের পরিবারের দন্দ্ব চলে আসছে। তাদের এই দন্দ্ব আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় নাজমুল আলমরা মাঝে মাঝেই জমিটি দখলে নিতে যায়। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে নাজমুল আলম তার পরিবারের ৬/৭জন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে ট্রাক্টর নিয়ে হাল চাষ করতে যায়। এ সময় আলহাজ উদ্দিনের স্ত্রী ইতি আক্তার ও মা শামছুন্নাহার বাঁধা দিতে গেলে নাজমুল ও তার ভাই আশরাফ উদ্দিন তাদের লাঠি দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে আহত করে। তাদের ডাকচিৎকারে আলহাজ উদ্দিন ও তার ছোট ভাই মেহেদী হাসান ও রাকিবুল হাসান এগিয়ে গেলে আশরাফ উদ্দিনের হুমুকে অন্য সদস্যরা দা, ছুরি ও লাঠি দিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এতে তারা গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। তারা বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালে শয্যাশায়ী আলহাজ উদ্দিন বলেন, ওরা শুধু আমাদের মারধরই করেনি, আমরা আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে বাড়িতে গেলে ওরা আমাদের পিছু ধাওয়া করে আমাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে। এতে আমাদের প্রায় দেড় লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

অভিযোগকারী ইতি আক্তার বলেন, নাজমুল মারধরসহ আমাকে টেনে হেচড়ে শরীরের কাপড় ছিড়ে আমার শ্লীলতাহানি করেছে। একপর্যায়ে জুয়েল মিয়া আমার গলা থেকে একভরি ওজনের একটি সোনার চেইন ছিড়ে নিয়ে যায়। যার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা।

অভিযুক্ত নাজমুল আলম বলেন, জমিটি ২৮ বছর আগে আমার বাবা কিনেছেন। জমির পক্ষে সকল কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। এই ২৮ বছর ধরেই জমিটি আমরা ভোগদখল করে আসছি। গতকাল হঠাৎ করে আলহাজ উদ্দিনরা জমিতে আমাদের কাজে বাধা দিতে আসে। এ সময় তাদের সঙ্গে আমাদের কিছু কথাকাটাকাটি হয়েছে। কোন রকম মারামারি বা বাড়ি-ঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাহিদ হাসান সুমন বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.