পাকুন্দিয়ায় ১৪ বাড়ি-ঘর ভাংচুর লুটপাট, মারধরে আহত ৫

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই দফায় হামলা চালিয়ে ১৪টি বসত ঘর ভাংচুর, লুপপাট ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নারীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ও বিকেলে উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের টান দিগাম্বরদী গ্রামে এসব হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার রাতেই ভুক্তভোগী কাজল মিয়া বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫/২০জনকে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

থানায় অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার দিগাম্বরদী গ্রামের আবদুল ছালামের ছেলে কাজল মিয়া গং ও নুরু মিয়ার ছেলে সাদ্দাম হোসেন গংদের মধ্যে বাড়ির সীমানা ও জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে গতকাল বুধবার দুপুর ১টা ও বিকেল ৫টার দিকে সন্ত্রাসী কায়দায় রামদা, বল্লম, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রতিপক্ষের সাদ্দাম, রাব্বি, হৃদয় ও মোবারকসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০জন সন্ত্রাসী বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তারা বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে কাজলকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এসময় কাজল মিয়া এর প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষের সাদ্দাম, রাব্বি, হৃদয় ও মোবারক লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে কাজল মিয়াকে গুরুতর আহত করে। হামলাকারীদের কবল থেকে রক্ষা করতে কাজলের ভাই শামীম ও বোন সেলিনা এগিয়ে গেলে তাদের দুজনকেও এলোপাথারী পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। পরে হামলাকারীরা ১৪টি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও মালামাল লুটপাট করে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দাবী এতে তাদের ২৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতনের শিকার নজরুল ইসলাম, ফুলবানু, সুমন, আবদুস ছালাম, সেতু, মাহমুদা, রুবেল, জুয়েল, রহিমা, আপন ও শামীমসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রামীন শালিস দরবার হয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকেরা দরবারের কোন সিদ্ধান্ত মানে না। এর জের ধরে গতকাল বুধবার দুই দফায় সাদ্দামের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাদের ১৪টি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা ঘরের ভেতরের আসবাবপত্র ভাংচুর, নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।

প্রতিবেশী শহীদুল্লাহ বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই মূলত কাজলদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে সাদ্দামের লোকজন। যাদের ঘরগুলো কুপিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে, তারা খুবই দরিদ্র প্রকৃতির লোক। দিন আনে দিন খায়। তারা আর কোন দিন এসব ঘর নির্মাণ করতে পারবে না। কারণ ঘর নির্মাণ করার মত টাকা তাদের নেই।

এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে প্রতিপক্ষের সাদ্দাম হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তবে সাদ্দামের মা মর্জিনা বেগম বলেন, গত মঙ্গলবার আমার ছেলে সাদ্দামকে ওরা মারধর করেছে। এ কারণেই সাদ্দামের বন্ধুরা ক্ষিপ্ত হয়ে দলবদ্ধভাবে কাজলদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখনও কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.