আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
সপ্তম ধাপের পৌর নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভায় আগামী দুই নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর বাইরে আওয়ামীলীগ থেকে একজন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অপরদিকে বিএনপি থেকে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এনিয়ে উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।
আজ রবিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে রিটার্নিং অফিসারের হাতে এসব মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রার্থীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী দুই নভেম্বর অনুষ্ঠেয় পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারি দল আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১০জন। এর মধ্যে দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাবেক কাউন্সিলর ও ছাত্রনেতা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আকন্দ। কিন্তু নজরুল ইসলামের মনোনয়ন মেনে নিতে পারেননি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক মো.মোতায়েম হোসেন স্বপন। তিনি মনোনয়ন না পেয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলমের হাতে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এদিকে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে এসব নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো বহাল রেখেছে। কিন্তু পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচনে এ সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে দলটির দুই হেভিওয়েট নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মো.জালাল উদ্দিন এবং উপজেলা বিএনপির এক নম্বর যুগ্মআহ্বায়ক ও বর্তমান মেয়র মো.আক্তারুজ্জামান খোকন। অপরদিকে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মো.আতাহার আলী।
এ ব্যাপারে মেয়র পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মো.জালাল উদ্দিন বলেন, আমি দল থেকে নয়, নেতাকর্মীদের ইচ্ছা ও জনগণের ভালোবাসা থেকে স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আশা করছি ভোট যদি সুষ্ঠ হয় তাহলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জনগন আমাকে নির্বাচিত করবে। আমি ২০১১সালের নির্বাচনে মেয়র পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম।
বর্তমান মেয়র ও উপজেলা বিএনপির এক নম্বর যুগ্মআহ্বায়ক মো.আক্তারুজ্জামান খোকন বলেন, আমি গত পিরিয়ডেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাশ করেছি। জনগণের চাপে এবারও আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। ভোট যদি সুষ্ঠ হয় তাহলে এবারও আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো বলে আশা করছি।
এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক মোতায়েম হোসেন স্বপন বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একজন সন্তান। গত ৪৬বছর ধরে আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছি। গত নির্বাচনেও আমি তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে আমি দলীয় মনোনয়ন পাইনি। এবারেও আমি মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছি। জনগণ আমাকে বলেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে, তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমি জনগণের পাশে থাকতে চাই।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম জানান, আজ রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে মেয়র পদে পাঁচজন, ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২জন ও সংরক্ষিত নারী আসনে ৮জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১১অক্টোবর, বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপীল ১২-১৪অক্টোবর, আপীল নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ১৬অক্টোবর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ অক্টোবর এবং ভোটগ্রহণ দুই নভেম্বর।