পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচনে কান ফাটানো মাইক

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভায় আগামি দুই নভেম্বর ভোটগ্রহণ করা হবে। গত ১৮অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে চলছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতিদিনই দুপুর ২টা বাজতে না বাজতেই প্রার্থীদের পক্ষে শুরু হয় মাইকিং। চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। আর টানা মাইকিংয়ে অতিষ্ঠ পৌরবাসী। তাঁদের মতে মাইকিংয়ের শব্দ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম বাতিল করা উচিত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৩দশমিক ৩৩ বর্গ কিলোমিটারের পৌরসভায় প্রায় ৩৩হাজার মানুষের বসবাস। ভোটার আছে ২৩হাজার ১৫১জন। মেয়র পদে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতন্ত্রসহ মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এছাড়াও ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮জন রয়েছেন।

শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬-এ নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক, শিল্প-এই পাঁচটি এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিধিমালায় নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ডেসিবল শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কিন্তু পাকুন্দিয়া পৌর এলাকায় তা মানা হচ্ছেনা। শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলা হলেও যিনি মাইকিং এর দায়িত্বে থাকেন তার ইচ্ছের উপর নির্ভর করে কতটুকু শব্দ ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে চারজন কাউন্সিলর প্রার্থী ও তিনজন মেয়র প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং চলে। বিভিন্ন সড়কে কম করে হলেও ৭-৮টি মাইকে প্রচারণা চালানো হয়।

পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মো.আকিবুজ্জামান অভিযোগ করেন, মাইকের উচ্চ শব্দের কারণে পড়ালেখায় বিঘœ ঘটছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। দুপুরের পর থেকেই মাইকের বিকট শব্দে কান জ¦ালা-পালা শুরু করে। মনে হয় যেন, কান ফেটে যাবে।

ক্ষোভের সঙ্গে পাকুন্দিয়া সদর বাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, উচ্চ শব্দের কারণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। ২টার পর থেকে অশান্তি শুরু হয়ে যায়। ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমটা বাতিল করা উচিত।

পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রেজাউল কবির কাওসার বলেন, নিয়মিত শ্রবণে সাধারণত ৬০ডেসিবল শব্দের তীব্রতায় মানুষ সাময়িক বধির ও ১০০ডেসিবলে স্থায়ী বধির হয়ে যেতে পারে। মাইকিং-এর শব্দ মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত করে। এতে শ্রবণশক্তি হ্রাস ছাড়াও প্রেশার বৃদ্ধিসহ হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। তবে শব্দ দূষণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। শব্দ দূষণ তিন বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মানসিক বিকাশের অন্তরায়।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো.সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রত্যেক প্রার্থী প্রচার-প্রচারণার জন্য একটি মাইক ব্যবহার করার কথা নির্বাচনী আইনে বলা আছে। কিন্তু শব্দের মান মাত্রা কতটুকু হবে তা আইনে বলা নেই।

Share.