পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে পাওয়া গেছে রেকর্ড পরিমান টাকা

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক খুলে এবার রেকর্ড পরিমাণ ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গেছে। যা ইতিপূর্বে প্রতিবার দানসিন্দুক খুলে প্রাপ্ত টাকার পরিমাণকে ছাড়িয়ে গেছে। নগদ টাকা ছাড়াও দানসিন্দুকে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে। আজ সকালে মসজিদের আটটি দানসিন্দুক একসাথে খোলা হয়। আজ সকাল ৯টায় মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক খোলার সাড়ে ৯ ঘন্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গণনা শেষ হয়। এর আগে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি দান সিন্দুক খোলার পর সর্বোচ্চ ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে ১২ টি বড় বস্তায় বস্তায় টাকা ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ ও মাদরাসার শতাধিক ছাত্র-শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১০ জন আনসার এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অংশ নেন।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম ও রূপালী ব্যংকের এজিএম মো. রফিকুল ইসলামে তত্ত্ববধানে টাকা গণনার কাজ সম্পন্ন করা হয়।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এর আগে সর্বশেষ গত ১৯ জুন দানসিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন ২কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তখন খোলা হয়েছিল ৪ মাস ২৬ দিন পর। এবার ৪ মাস ১৭ দিন পর খোলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম আরো জানান, প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদের এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যায় নির্বাহ করা সহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্রদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা প্রদান করা হয়।

সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জে অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদাট প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। কথিত আছে প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

Share.