ফেসবুকে শিক্ষিকার আপত্তিকর ছবি, এলাকায় সমালোচনার ঝড়

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় মো.জালাল উদ্দিন নামের এক শিক্ষকের ফেসবুক আইডি থেকে এক সহকারী শিক্ষিকার আপত্তিকর ছবি ফাঁস হয়েছে। এবিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আর তা নিয়ে কয়েক দিন ধরে এলাকার বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে শিক্ষিকার আপত্তিরকর ছবি প্রচার হওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ওই শিক্ষকের বিচার ও অপসারণের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভ-মিছিল করেছে এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা। অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন উপজেলার মির্জাপুর শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ভুক্তভোগী ওই নারী একই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৬ডিসেম্বর) সকালে প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনের নিজ নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে ওই শিক্ষিকার আপত্তিকর একটি ছবি পোস্ট করা হয়। আর ছবিটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এনিয়ে পুরো উপজেলায় সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক এলাকায় গা-ঢাকা দিয়েছেন। এছাড়া বিগত দিনেও ওই শিক্ষিকার সঙ্গে তার বিরুদ্ধে রয়েছে একের পর এক বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকা-ের অভিযোগ। এমনকি তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রভাবে নষ্ট হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ।

স্থানীয় আবু সাঈদ, মো.জায়েদ, জাহাঙ্গীর হোসেন ও পলাশসহ কয়েকজন বলেন, প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কয়েক বছর ধরে একের পর এক অপকর্ম করে আসছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তার কোনো বিচার হচ্ছেনা। এবার ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি ভাইরালের মাধ্যমে তার কুকর্ম ফাঁস হয়েছে। আমরা এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, ভাইরাল হওয়া ছবিটি ন্যাক্কারজনক। এটি পুরো শিক্ষক সমাজের সুনাম ও ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষকদের চরিত্র নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শিক্ষিকার সঙ্গে ওই প্রধান শিক্ষকের প্রকৃতপক্ষে কী সম্পর্ক তা উদঘাটন করে শিক্ষা বিভাগ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো.জালাল উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনার ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বামী চন্দন দত্ত বলেন, আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে আমাদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে। সমাজে আমাদের মানহানি ঘটিয়েছে। এতে চরমভাবে আমাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রায়হান উদ্দিন আকন্দ বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে শুনেছি। শনিবার স্কুলে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছে বলে জেনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলে দিয়েছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইউএনও স্যার মৌখিকভাবে বলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ বা ভিকটিম কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.