মিজানুর রহমানঃ
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পক্ষে কাজ না করাই কাল হলো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীদের; রোষানলে পড়লেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের। কেড়ে নেওয়া হলো ১০ টাকায় চাল কেনার কার্ড। এ নিয়ে খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও উর্পজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। তারপরও টনক নড়েনি কর্তৃৃপক্ষের। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার চরমান্দালিয়া ইউনিয়নের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন। তিনি ওই ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। যাদের কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে তারা সকলেই নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
জানা যায়, হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু রয়েছে এই ইউনিয়নটিতে। কার্ডের মাধ্যমে প্রতিমাসে নগদ ৩০০ টাকায় ৩০ কেজি চাল গ্রহণ করে থাকেন নির্দিষ্ট উপকারভোগীরা।
উত্তর চরমান্দালিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান, মতিউর রহমান, রতন মিয়া, আব্দুর রহিম, রবিউল আউয়াল, হাছেন উদ্দিন ফকির, আব্দুল কাদির, হনুফা, জাহেরাসহ ২০১ জন উপকারভোগীর কাছ থেকে কৌশলে কার্ড কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ইউপি নির্বাচনে যারা শাহিনের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করেননি, ভোটে জিতে যাওয়ার পর সে পরিবারগুলোর কার্ড কেটে নেওয়া হচ্ছে।
১নং ওয়ার্ডের উত্তর চারমান্দালিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি দুই বছর ধরে ৩০০ টাকা দিয়ে ৩০ কেজি চাল পাচ্ছি। আমাদের চাল উত্তোলনের কার্ড ডিলারের কাছে ছিল। সেখান থেকে চেয়ারম্যান আমার কার্ড নিয়ে গেছে। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কার্ড বাতিল করেছেন বলে জানিয়ে দেন। এখন আমাকে কার্ড, চাল কোনোটিই দেননি।’
আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনে অনেকেই অনেকের পক্ষে ছিল। আমি নৌকার পক্ষে ছিলাম। নির্বাচনে চেয়ারম্যানের বিরোধীতা করায় আমার পেটে লাথি দিয়েছেন। অনেকেরই কার্ড রেখে দিয়েছেন। আমরা গরিব মানুষ। এখন আমরা কী করব।’
রিক্সা চালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল পেতাম। বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন নতুন করে কার্ড দেওয়ার নামে আমার কার্ড নিয়ে গেছে। কার্ড ফেরত চাইলে চেয়ারম্যান ধমক দেয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠানো হয়েছে। কারও কার্ড বাতিল করার সুযোগ আমার নেই।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম কাসেম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ এখনো আমার কাছে পৌঁছায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।