নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বেভারেজ কারখানায় ৫২ জন মৃত্যুর ঘটনায় কিশোরগঞ্জের ৭ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের ধারণা আগুনে পুড়ে তারা মারা গেছেন। নিখোঁজের খবর জানার পর থেকে পরিবারগুলোতে শোকের মাতম চলছে।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের পূর্ব কালিয়ারকান্দা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম (১৪)। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বাবার অভাবের সংসারে আর্থিক টানাপোড়ন থাকায় আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য গত দুই মাস আগে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুসের কারখানায় কাজ করতে যান। গত বৃহস্পতিবার সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকা-ে নিহত হয়েছেন নাজমুল। এমন খবরে পরিবারের একমাত্র ছেলেকে হারানোর ঘটঁঁনায় পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে কালিয়ারকান্দা গ্রামের চারপাশ।
একই কারখানায় কাজ করতেন কটিয়াদী উপজেলার সহশ্রম ধূলদিয়া ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের জুমেলা বেগমের দুই মেয়ে কল্পনা আক্তার ও ছোট মেয়ে রাবেয়া আক্তার (১৮)। বড় মেয়ে বেঁচে গেলেও পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা এখন জুমেলা বেগম। রাবেয়া ও নাজমুলের মতোই একই ঘটনায় জেলার সদর, কটিয়াদী ও করিমগঞ্জ উপজেলায় মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহতদের মধ্যে অনেকেই বাড়ি ফিরে এসেছেন দিচ্ছেন আগুনে পোড়ার হাত থেকে বেঁচে ফিরে আসার লোমহর্ষক র্বণনা। আর নিহতের স্বজনরা বলছেন এখন পর্যন্ত কোন সন্ধান মিলছে না মারা যাওয়া ব্যক্তিদের। তাই লাশ ফিরে পেতে সরকারের সহায়তা চান তারা।
নিখোঁজদের মধ্যে অন্যরা হলেন, কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার স্ত্রী অমৃতা আক্তার (২৫), বাচ্চু মিয়ার মেয়ে তাসলিমা আক্তার (১৮), করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কুকিমাদল গ্রামের হারুনর রশীদের মেয়ে মিনা আক্তার (২২), একই ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আবু বাক্কার (৪২) ও তার স্ত্রী জেসমিন (৩৫)।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জেলার অনেকেই মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। কিন্তু সরকারিভাবে এখনো এ বিষয়ে কোনো তথ্য আমাকে জানানো হয়নি। আমাদের সরকারিভাবে জানানো হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।