স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি করা হয়। তথ্য নিশ্চিত করেছেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামলায় মোট ১২৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার বাদি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে তহমুল ইসলাম মাজহারুল।
অভিযুক্তদের মধ্যে প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২ নম্বরে শেখ রেহানা ও ৩ নম্বরে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রয়েছেন।
মামলার বিবরনে জানা যায়, গত ৪ আগষ্ট ১ নম্বর থেকে ২০ নম্বর অভিযুক্তরা সারাদেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করে। সেই মোতাবেক কিশোরগঞ্জ যেন আন্দোলন হতে না পারে তার জন্য ২১-৪০ নম্বর অভিযুক্তদের নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশ বাস্তবায়নে ৪১-১২৪ নম্বর অভিযুক্তরা তাদের হাতে থাকা শর্টগান, বন্ধুক, পিস্তল, ককটেল, বোমা ও দেশীয় অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ করে আন্দোলন দমাতে গণহত্যার নির্দেশ প্রদান করেন।
নিদের্শ মোতাবেক, গত বছরের ৪ আগষ্ট দুপুর ১২টায় অভিযোগকারী তহমুল ইসলাম মাজহারুল কিশোরগঞ্জ শহরের স্টেশন রোড এলাকায় ছাত্র জনতার মিছিলের সঙ্গে পৌঁছা মাত্রই অভিযুক্তরা তাদের অবস্থানরত মিছিলে অতকির্ত হামলা চালিয়ে হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে তহমুল ইসলাম মাজহারুলসহ মামলায় সাক্ষীদের আহত করে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। একই সাথে হাতে থাকা গ্রেনেট, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে। আহতরা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়।
অভিযোগকারী তহমুল ইসলাম মাজহারুল জানান, আমি একজন বিএনপি’র সমর্থক। বিএনপি’র প্রত্যেকটি আন্দোলনে আমি অংশ নিয়েছি। ৪ আগষ্ট শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহরের গৌরাঙ্গ বাজার পৌঁছালে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছি। মাথায় এখনও বুলেট রয়েছে। আমি জুলাই ফাউন্ডেশনের সদস্য। এর আগেও বিভিন্ন আন্দোলনে আহত হয়েছি। ৪ তারিখের ঘটনায় আমি নতুন জীবন পেয়েছি। এ ঘটনায় ১২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছি। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজারের জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো।