আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ১০দিন ধরে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন এক কলেজ ছাত্রী। ২৩ডিসেম্বর রাত থেকে তিনি তার স্বামীর বাড়িতে উঠে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবি নিয়ে অবস্থান শুরু করেছেন। ঘটনাটি উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের। কলেজ ছাত্রীর স্বামী ফাইজুল হক ওই গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে। স্ত্রী স্বর্ণার অবস্থানের খবর পেয়ে ফাইজুল বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। ওই ছাত্রী একই উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের হরশী গ্রামের মৃত মুরশিদ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি কলেজ থেকে গত বছর ডিগ্রী পরীক্ষা দিয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুলে ফাইজুল ও ওই ছাত্রী শিক্ষকতা করতেন। শিক্ষকতার সুবাদে তাদের মধ্যে ২০১৭সাল থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘদিন সম্পর্কের পর ২০২১সালের জুলাই মাসে পাশর্^বর্তী হোসেনপুর উপজেলার এক কাজীর মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন তারা। ৭৫হাজার টাকা দেনমোহরে আবদ্ধ হয়। তরুণীর মাথায় কোরআন শরীফ রেখে বিষয়টি আপাতত গোপন রাখার শর্তে তাকে বিয়ে করেন ফাইজুল। একারণে ওই তরুণী বিষয়টি পরিবারের কাউকে জানায়নি। এই সুযোগে ফাইজুল ওই তরুণীকে রেখে অন্যত্র আরেকটি বিয়ে করেন। এমন খবর পেয়ে ওই তরুণী স্ত্রীর দাবি নিয়ে ফাইজুলের বাড়িতে অবস্থান নেন।
স্বামীর বাড়িতে অবস্থানে থাকা ওই তরুণী বলেন, ফাইজুল আমার স্বামী। বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ না করার শর্ত থাকায় আমি কাউকে জানায়নি। সম্প্রতি ফাইজুল অন্য জায়গায় আবারও একটি বিয়ে করেছে। এমন সংবাদ পেয়ে গত ২৩ডিসেম্বর রাতে তার বাড়িতে আসি। পরে সে আমাকে বলে, আমার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বাড়িতে উঠিয়ে আনবে। এমন আশ^াস দিয়ে ওই রাতেই আমাকে নিয়ে আমার বাড়িতে যায় ফাইজুল। কিন্তু আমার বাড়ির কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলে আমাকে বাড়িতে রেখেই চলে আসে সে। তার এমন আচরণে দিশেহারা হয়ে পড়ি। উপায় না দেখে ওই রাতেই আমি আবারও তার বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে এসে দেখি তার ঘর তালাবদ্ধ। বাড়িতে ফাইজুল ও তার মা নেই। এখন পর্যন্ত ফাইজুলের কোনো খোঁজখবর পাচ্ছিনা।
ওই বাড়িতে গিয়ে ফাইজুল ও তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। অন্য কোনো মাধ্যমেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ফাইজুলের চাচাতো ভাই আবদুল আউয়াল বলেন, ফাইজুল ও তার মা গত ২৩ডিসেম্বর রাত থেকে বাড়িতে নেই। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ। তারা কোথায় আছে, কোনো খবর পাচ্ছিনা।
পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো.সারোয়ার জাহান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।