স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে দোকানে আইসক্রিম কিনতে যেয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে (১২) জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে গ্রেপ্তার হাবিবুর রহমান ওরফে হবির (৫৭) ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার দুপুরে হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের লাখুহাটি গ্রামে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা হাবিবুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবি করেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাখুহাটি গ্রামের হাবিবের মুদি দোকানে আইসক্রিম কিনতে গেলে মজা খাওয়ানোর কথা বলে হাবিব শিশুটিকে ডেকে দোকানের ভিতরে নিয়ে যান। এসময় হাবিব মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশে হাত দেন এবং জোরপূর্বক তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এসময় মেয়েটি চিৎকার করলে হাবিব তাঁকে ছাড়তে বাধ্য হন। পরে মেয়েটি বাড়িতে এসে তাঁর শারিরীক সমস্যা হলে মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে সে মাকে জানায় হাবিব তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। তবে মেয়েটির পরিবার থেকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হলেও থানায় মামলা নেওয়া হয় ধর্ষণ চেষ্টার। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার দুপরে ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বাদী হয়ে হাবিবুর রহমান হবির বিরুদ্ধে হোসেনপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আসামি হাবিবকে লাখুহাটি তাঁর মুদি দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার আসামি হাবিবকে কিশোরগঞ্জ আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে। এদিকে এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি হাবিবের পরিবারের সদস্যরা বুধবার সকালে মানববন্ধন শুরু হওয়ার আগে মুদি দোকানের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করে যারা ভুক্তভোগী মেয়েটির পক্ষ নিয়ে আন্দোলন করছেন তাঁদের লোটপাটের অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা চালায়। তবে পুলিশ বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আসামি হাবিবের বসত ঘরের দুটি কক্ষ থেকে দোকান থেকে সরিয়ে নেওয়া মালামালের সন্ধান করে। নিজের ঘরে দোকানের মালামাল লুকিয়ে অন্যকে লোটপাটের অভিযোগে ফাঁসানের চেষ্টার বিষয়ে আসামি হাবিবের ছেলে জহিরুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করলে এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, সকালে কয়েকজন মিলে তাঁর দোকান থেকে মালামাল লোটপাটের চেষ্টা চালায় এসময় বাড়ির মহিলারা দোকান থেকে মালামাল সরিয়ে নিয়ে বসত ঘরে লুকিয়ে রাখেন। তবে এলাকার মাহিনুর ইসলাম, নাজমুল ইসলাম ও মাসুদসহ কয়েকজনের ভাষ্য সকালে হাবিবের দোকানে কোনো লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি বরং হাবিবকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে বাঁচাতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা লুটপাটের নাটক সাজিয়ে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। যাতে ধর্ষণের মতো স্পর্শকাতর ঘটনা আড়ালে পরে যায়। তাঁরা জানান ইতিপূর্বেও হাবিবুরের বিরুদ্ধে নারীদেরকে উত্যক্ত ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যা বিভিন্ন সময় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভুক্তভোগী মেয়েটির মা থানায় মামলা দায়েরের পর হাবিবকে গ্রেপ্তার করে গতকাল বুধবার আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে এবং মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর মুদি দোকানে মালামালের বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশ সব কিছু খতিয়ে দেখছে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।