প্রতিনিধি হোসেনপুরঃ
পাগলীটা এদিক সেদিক ঘুরতো। কারও সঙ্গে বেশি কথা বলতোনা। কেউ খাবার দিলে খেতো। তবে জোর করে কারও কাছ থেকে কিছু নিতোনা। পরিচয়হীন এই পাগলীটা মা হয়েছে। তার সন্তানের বাবার পরিচয়ও শনাক্ত হয়নি।
খবর শুনে অনেকেই দেখতে এসেছেন মা ও বাচ্চা শিশুকে। অসহায় পাগলী আর তার ফুটফুটে শিশু সন্তানের মায়াবী মুখ দেখে সবাই আবেগে আপ্লুত। কিন্তু পাগলীর মত তার সন্তানের বাবার পরিচয় সম্পর্কেও কারও কিছু জানা নেই।
সোমবার সকাল ৭টার দিকে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার রামপুর বাজার এলাকায় ছেলে সন্তান জন্ম দেন এক পাগলী। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া পারভেজ ছুটে যান ঘটনাস্থলে। পরম মমতায় শিশুটিকে কোলে তুলে নেন তিনি (ছবিতে ইউএনও রাবেয়া পারভেজ এর কোলে শিশুটি)। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তিনি পাগলী মা ও শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১০/১২ দিন আগে উপজেলার রামপুর বাজারে এক পাগলী নারী আসেন। সন্তান সম্ভবা ওই পাগলী নারী কারও সাথে বেশি কথা বলেন না। কেউ কিছু খেতে দিলে খান। তবে জোর করে কারো খাবার খান না তিনি। সোমবার সকাল ৭টার দিকে ওই পাগলী নারীর প্রসব বেদনা দেখা দিলে রামপুর বাজারের পাশের আমির উদ্দিনের মেয়ে জেসমিন ও সাবিনা তাদের বাড়িতে নিয়ে সন্তান প্রসব করার কাজে সহযোগিতা করেন। সেখানে ওই পাগলী নারী ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া পারভেজ জানান, পাগলীর বাচ্চার পিতৃ পরিচয় সম্পর্কে এখনও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি বাচ্চাটিকে খাওয়াতেও চাচ্ছেন না। অনেক বুঝিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য রাজি করানো হয়েছে। চিকিৎসা চলছে। তিনি আরও জানান, শিশুটিকে কেউ দত্তক নিতে চাইলে আইনগতভাবে বিষয়টি দেখা হবে। তাছাড়া সমাজ সেবার মাধ্যমেও তার ব্যাপারে করণীয় ভাবা হচ্ছে।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নাছিরুজ্জামান সেলিম জানান, হাসপাতালের একটি রুমে মা ও শিশুটিকে রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও নার্স তাদের সেবায় নিয়োজিত আছেন। বাচ্চা ও তার মা বর্তমানে সুস্থ ও ভালো আছেন।