স্টাফ রিপোর্টারঃ
দীর্ঘ ১৫ ঘন্টা গণনা শেষে পাগলা মসজিদের দানসিন্ধুকে পাওয়া গেছে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় খোলা হয় পাগলা মসজিদের ৯টি দান সিন্ধুক। এরপর মসজিদের ২য় তলার মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা কার্যক্রম। দিনভর গণনা শেষে রাত সাড়ে ১০টা দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ দানের টাকার তথ্য নিশ্চিত করেন। এছাড়াও দানসিন্ধুকে স্বর্ণ, রুপা, বিদেশী মুদ্রা, ডলার-পাউন্ড, রিয়েল, রিঙ্গিত, পাওয়া গেছে।
৩মাস ২০দিন পর খোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্ধুক। প্রতিবারই সিন্ধুকে থাকা দানের টাকা রেকর্ড ভেঙ্গে রেকর্ড গড়ছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। দানসিন্ধুকে টাকার পরিমান দেখে চক্ষু চড়কগাছ। শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় দায়িত্বরত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ-এর নেতৃত্বে খোলা হয় সিন্ধুক। ৯টি সিন্ধুক থেকে পাওয়া যায় ২৩ বস্তা টাকা।
টাকা গণনায় ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ১৩৪ জন শিক্ষার্থী, ৬০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১০ জন শিক্ষক, ১০ জন আনসার সদস্যসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশ গ্রহণ করেন। পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্র জানিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ৮টি দানসিন্ধুক থাকলেও দানের টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আরও একটি দানসিন্ধুক বাড়ানো হয়েছে। এখন পাগলা মসজিদে দানসিন্ধুকের সংখ্যা ৯টি।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট খোলা হয়েছিল এ মসজিদের ৮টি দান সিন্ধুক। তখন রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সাড়ে ১৩ ঘণ্টায় ২০০ জনের এ টাকা গণনা শেষে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া একটি ডয়মন্ডের নাকফুলসহ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া যায়। তার আগে ৬ মে রমজানের কারণে চার মাস পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯টি বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গহনা ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। ২০টি বস্তায় তখন ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গহনা ও হীরা পাওয়া যায়।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। ইতোমধ্যে মসজিদটিতে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।