২৫ বছর পর স্থায়ী ঠিকানা পেল গোলাপজান

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
তিন দিকে খোলা আকাশ ও সবুজ প্রকৃতি। প্রাণ জুড়ানো নির্মল বাতাস। শুধু একদিকে ঘরবাড়ি। মাঝখানে ছোট্ট একটি নতুন বাসা। বাসাটি সবার দৃষ্টি কাড়ছে। বাসাটির শোবার ঘর, রান্নাঘর, ব্যাথরুম, টিউবওয়েলসহ সবই ঝকঝকে নতুন। আজ কাঙ্খিত এই বাসাতে উঠেছেন গোলাপজান। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের নামাপাড়া(বাঘের বাড়ি) গ্রামে গোলাপজানের বাড়ি।

পচিঁশ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন তিনি। নিজের থাকার কোনো স্থায়ী ঘর ছিল না এই হতদরিদ্রের। স্বামী আব্দুস সালামকে হারিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি থেকে পার করেছেন সারাটি জীবন। আজ পাকুন্দিয়া থানার পক্ষ থেকে নতুন একটি আধা পাকা ঘর তুলে দেয়া হয় গোলাপজানের হাতে। ঘরটি পেয়ে খুবই আনন্দিত গোলাপজান।
বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পাকুন্দিয়া থানার সার্বিক সহযোগীতা ও অর্থায়নে এ ঘর উপহার দেওয়া হয় তাঁকে। হোসেন্দী ইউনিয়নের নামাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে তরুণের দেওয়া দুই শতাংশ জমিতে নির্মাণ করা ঘরটিতে দুটি রুম, একটি বারান্দা ও একটি রান্নাঘর আছে।

আজ রবিবার(১০ এপ্রিল) ১২টার দিকে ঘরের চাবি গোলাপজানের হাতে হস্তান্তর করেন পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ হাসান সুমন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা।
নতুন ঘর পেয়ে তাঁর অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে উচ্ছসিত গোলাপজান বলেন, আমার কোনো জমিজমা আছিল না। কোনো ভিটাও আছিল না। কোনো ঘর-দুয়ারও আছিল না। পঁচিশ বছর অয় স্বামী মইরা গেছে। এর পর থেইক্যা মাইনষের বাড়ি বাড়ি কাম কইরা চলতাছি। পাকুন্দিয়া থানার ওসি সারোয়ার স্যারের সহযোগীতায় একটু জায়গা পাইছি। একটা পাকা ঘর পাইছি। আজ আমার জীবনের সব দুঃখ দূর অইয়া গেছে। বাকী জীবনটা নিজের ঘরে থাইক্যা মরতে পারমু। আল্লাহ সারোয়ার স্যারের মঙ্গল করুক।

পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক(তদন্ত) নাহিদ হাসান সুমন বলেন, এটি মাননীয় আইজিপি স্যারের একটি মহৎ উদ্যোগ। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি থানায় হতদরিদ্রদের মাঝে একটি করে ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম(বার) স্যারের নির্দেশনায় পাকুন্দিয়া থানার হোসেন্দী ইউনিয়নের হতদরিদ্র গোলাপজানকে জায়গাসহ একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

Share.