নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আজ (বুধবার) ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস। এ দিনটি বাঙালী জাতির জন্য একটি শোকাবহ ও বেদনাদায়ক দিন। এ দিন জাতি হারিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে। আর কিশোরগঞ্জবাসী হারিয়েছিল এলাকার সূর্যসন্তান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে।
সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের বীরদামপাড়া গ্রামে ১৯২৫ সালে জন্ম নেন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম। গ্রামের সহজ সরল ও সাদা মনের মানুষের মতো সৈয়দ নজরুল ইসলাম জীবনযাপন করতেন। গ্রামে এলে পৈতৃক বাড়িতে একটি টিনের ঘরে তিনি থাকতেন। সেই প্রিয় নেতাকে জেলখানায় হত্যার পর স্বজন ও এলাকাবাসী নেতার মরদেহ দেখতে না পারার কষ্ট নিয়ে আজো কাঁদে। দুর দুরান্ত থেকে লোকজন এসে সেই বাড়িটি দেখে যান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত ঘনিষ্টসহযোগী ছিলেন কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী। এ চার নেতা পাকিস্থানীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ চার নেতা নয় মাস মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনা করে এ দেশকে স্বাধীন করেছেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখনি ১৯৭৫ সালের ১৫আগস্টে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর চার নেতাকে জেলখানায় বন্দি করা হয়। নানান প্রলোভন দেয়ার পরও যখন জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সাথে আপস করতে রাজি হননি, তখন ঘাতকরা চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘাতকরা রাতের আধাঁরে জেলখানায় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
নিরাপদ স্থান হিসেবে পরিচিত জেল খানায় জাতীয় চার নেতার এ নির্মম হত্যাকান্ডের শোক সারা দেশের মতো কিশোরগঞ্জবাসী বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশ্বাস করেন জেল খানায় চার নেতাকে হত্যা না করলে আওয়ামী লীগ আগেই ঘুরে দাড়াতো। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধের সফল নেতৃত্ব দিয়েছিল, তারা বেঁচে থাকলে আজকে শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের দিকে যে অবস্থায় নিয়েছেন। চার নেতা বেঁচে থাকলে হয়তো তা আগেই হতো।