১৭ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও বিজয় দেখেনি কিশোরগঞ্জবাসী

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ
আজ ১৭ ডিসেম্বর, কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দেখেনি কিশোরগঞ্জের মানুষ। ৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশের মানুষ বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করলেও কিশোরগঞ্জের মানুষ বঞ্চিত ছিল সে আনন্দ থেকে। সেদিনও কিশোরগঞ্জের আকাশে উড়ছিল পাকিস্থানী পতাকা, পাক বাহিনীর দোসরদের সাথে চলেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুরো সময় জুড়ে কিশোরগঞ্জ ছিল স্বাধীনতা বিরোধীদের শক্ত ঘাটি।

২৫মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর সর্বপ্রথম ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ট্রেনযোগে হানাদার পাকবাহিনী প্রথম কিশোরগঞ্জে প্রবেশ করে। ৪ ডিসেম্বর পাকবাহিনী কিশোরগঞ্জ ছেড়ে চলে গেলেও তাদের দোসররা কিশোরগঞ্জে শক্ত অবস্থান ধরে রাখে। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকবাহিনীর আত্মসমর্পনের খবরে উজ্জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা কিশোরগঞ্জকে মুক্ত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ঐদিন রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন দল কিশোরগঞ্জ শহরের চারপাশে সশস্ত্র অবস্থান নেয়।

পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শহরের পূর্ব দিক দিয়ে কোম্পানী কমান্ডার কবীর উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে প্রথমে একদল বীর মুক্তিযোদ্ধা কিশোরগঞ্জে প্রবেশ করে। এর পর পরই অন্যান্য প্রবেশ পথ দিয়েও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি দল এবং পরে ক্যাপ্টেন চৌহানের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী শহরে প্রবেশ করে। এ সকল দলসমূহের নেতৃত্বে ছিলেন মাহবুবুল আলম, আ. বারী খান, নাজিম উদ্দিন কবীর, ক্যাপ্টেন হামিদ, হান্নান মোল্লা, অধ্যাপক আ. গণি, সাব্বির আহমদ মানিক।

মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযানের খবরে মুক্তিকামী জনতাও উল্লাস করে স্বাধীনতার শ্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। সামান্য প্রতিরোধের পরই পাকবাহিনীর এদেশীয় দোসররা আত্মসমর্পন করে। শহরের শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করে পাকবাহিনীর দোসররা। এভাবেই বিজয় দিবসের একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের আকাশে উঠে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

Share.