আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
মাঘও শেষ হয়নি, ফাল্গুনও আসেনি। তবুও লিচু গাছে উঁকি দিয়েছে মুকুল। শীতের স্নিগ্ধতার মধ্যেই শাখায় শাখায় শোভা পাচ্ছে মুকুল। লিচু গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেওয়া মুকুলের ঘ্রাণ যেন নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে মৌমাছিদের। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামের লিচু বাগানগুলোতে ফাল্গুনের আাগেই মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। আর আশায় বুক বেঁধে পরিচর্যা করছেন বাগানি ও চাষীরা।
মঙ্গলবাড়ীয়ার লিচু রসে ভরা ও সুস্বাদু। গোলাপী ঘ্রাণযুক্ত এ লিচু দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে আগে বাজারে আসে বলে এর কদর রয়েছে দেশ জুড়ে। গত কয়েক মৌসুম ধরে বিভিন্ন এলাকায় কম বেশী লিচু চাষ হলেও মানুষের কাছে মঙ্গলবাড়ীয়ার লিচুর গ্রহণ যোগ্যতাই আলাদা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দূর্যোগ না হলে এবারও মঙ্গলবাড়ীয়ায় রেকর্ড পরিমাণ লিচুর উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন চাষী ও বাগানিরা।
কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুইশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ গ্রামে লিচু চাষ হচ্ছে। প্রথমে স্বল্প সংখ্যক চাষি বাড়ির আঙিনায় লিচু চাষ করলেও এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লিচু চাষ করে ব্যপক সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। বর্তমানে এই ছোট্ট গ্রামটিতে প্রায় চারহাজার লিচু গাছ রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ থেকে প্রায় একশ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হবে বলে মনে করছে কৃষি অফিস। এ লিচু মঙ্গলবাড়ীয়ার লিচু নামেই সবার কাছে পরিচিত।
মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামের লিচু চাষি মোঃ মোখলেছুর রহমান দাদাভাই বলেন, লিচু গাছগুলোতে লিচু আসা থেকে শুরু করে লিচু সংগ্রহ করা পর্যন্ত চাষীদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। গাছে মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গেই মুকুলকে টিকিয়ে রাখতে ওষুধ স্প্রে করা হয়। মুকুল যাতে ঝরে না পড়ে সেজন্য গাছের গোড়ায় সার ও পানি ব্যবহার করা হয়। মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামের আরেক লিচু চাষি মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গাছে মুকুল দেখে মনটা ভরে গেছে। প্রতি বছরই যথা সময়ে লিচু গাছে পরিচর্যা দিয়ে ভালো ফলনের উপযোগী করে তোলা হয়। আবহাওয়াজনিত কারণে যদি মুকুল নষ্ট না হয় তাহলে গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি ফলন হবে বলে আশা করছি।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, গাছে মুকুল আসার পূর্ব থেকেই উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কোন সময়ে কোন কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহার করা উচিত সে বিষয়েও পরামর্শ দিচ্ছেন।