নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। ঈদজামাতকে নির্বিঘœ ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে মাঠের দাগ কাটা, মেহরাব ও দেয়ালে চুনকাম করা, ওজুখানা তৈরি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ ঈদজামাত আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। করোনার কারণে গত দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার ১৯৫তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই ঈদগাহ ময়দানে। সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হওয়া জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। বড় ঈদগাহ, বড় জামাত, বেশি মুসল্লির সাথে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয়-এমন আকর্ষণে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেক ধর্মপ্রান মুসলমান। মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, মেডিক্যাল টিম, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ সব আয়োজন রয়েছে। এদিকে দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের সুবিধার্থে কিশোরগঞ্জের ভৈরব-ময়মনসিংহ রুটে থাকবে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে বিশেষ দুটি ট্রেন।
অপ্রিতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপি এম (বার), নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুলিশ, র্যাব ও পাঁচ প্লাটুন বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি ড্রোন ক্যামেরা, ছয়টি ভিডিও ক্যামেরা, বাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরা, ছয়টি ভিডিও ক্যামেরা, ফায়ার সার্ভিস, ছয়টি এ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম, পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম, মাইন্ড ডিটেক্টর, বোম ডিসপোজাল টিম, সহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিবারেই এই মাঠে ৪ লাখেরও অধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করে থাকেন। মুসল্লিরা বলছেন বিগত দুবছর করোনার কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত না হওয়ায় তাদের আক্ষেপ ছিল। এবছর জামাত হওয়ায় ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে ঈদের আমেজ বিরাজ করছে।
মাস্ক, জায়নামাজ ছাড়া কোন কিছু সাথে আনা যাবে না। নিরাপত্তা জোরদারে মোবাইল নিয়ে প্রবেশও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম। প্রায় ৬ একর জমির উপর শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের অবস্থান। জনশ্রুতি রয়েছে প্রায ২০০ বছর আগে এই মাঠে এক সাথে সোয়া লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করে ছিলেন। এরপর থেকে শোলাকিয়া ঈদগাহ হিসেবে পরিচিতি পায়।