প্রতিবন্ধীর পাওনা টাকা না পাওয়ায মানবেতর জীবন যাপন

0
মিজানুর রহমানঃ
টাকা ধার দিয়ে ফেরত না পেয়ে পাঁচ বছর ধরে প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রোকসানা আক্তার নামের এক ভিক্ষুক। প্রতিবন্ধী ভাতা, মানুষের কাছ থেকে যাকাত, ফেতরা ও ভিক্ষা করে সঞ্চিত ৫০ হাজার টাকা ফেরত না পাওয়ায় মানবেতর জীবন কাটছে কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের বাসিন্দা রোকসানার। তিনি ওই গ্রামের আবু তাহের এর মেয়ে।  এ ঘটনায় পাওনা টাকা আাদায়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন রোকসানার পিতা আবু তাহের।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে পার্শ্ববর্তী র্কশা  কড়িয়াইল ইউনিয়নের কানকাটি গ্রামের হিরা মিয়া কাগজমূলে ওই প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা ধার নেন। এরপর যথাসময়ে টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। দেয় দিচ্ছি বলে গত পাঁচ বছর ধরে ঘুরাচ্ছেন রোকসানা ও তার পরিবারকে। এনিয়ে সম্প্রতি টাকা চাইতে গেলে অভিযুক্ত হিরা মিয়া ও তার লোকজন রোকসানাকে হুমকি-ধামকিসহ ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
রোকসানার পিতা আবু তাহের বলেন, আমার মেয়ে জন্মের পর থেকে অন্ধ। মানুষের কাছ থেকে পাওয়া টাকা, প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ও যাকাত-ফেতরার সঞ্চিত ওই টাকায় ছিল তার একমাত্র সম্বল। আমার মেয়ের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না হিরা মিয়া। আমি টাকা চাইতে গেলে সে বিভিন্ন টালবাহানা ও একপর্যায়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে ভয় দেখায়। চেয়ারম্যান, মেম্বারদের শরণাপন্ন হয়েও কোনো কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি। আমি আমার মেয়ের পাওনা টাকাগুলো উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযুক্ত হিরা মিয়া টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ধার নেওয়া টাকা রোকসানার এলাকা চৌদ্দশত ইউনিয়নের বড়খালের পাড় গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে রাসেল  কাছে  দিয়েছিলাম। কিন্তু রাসেল মিয়া রোকসানার কাছে সে টাকা ফেরত দেয়নি। রাসেল এর কাছে থেকে টাকা উদ্ধার করে রোকসানাকে ফেরত দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সরজমিনে গেলে চৌদ্দশত ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ সাহাব উদ্দিন,৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার নজরুল ইসলাম, কর্শা কড়িয়াইল ইউনিয়নের কানকাটি ওয়ার্ডের আওয়ামী কৃষক লীগের সভাপতি চান মিয়া এ প্রতিনিধি জানান বহুবার চেষ্ঠা করেছি কিন্তু অন্ধ প্রতিবন্ধীর টাকা আদায় করে দিতে পারিনি। প্রতিবেশী সাইফুল, দুলাল জানান বর্তমানে পরিবারটি অতি কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। টাকাগুলো পেলে পরিবারটি খুব উপকৃত হবে।
কর্শা কড়িয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন জানান, হিরা মিয়া টাকা নেওয়ার কথা আমার কাছে স্বীকার করেছে। সে টাকা ফেরত দিতে দুই দিনের সময় নিয়েও কথা রাখেনি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমি সহযোগিতা করব।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
Share.