পাকুন্দিয়ায় চুরির অপবাদ সইতে না পেরে গ্যারেজ কর্মচারীর আত্মহত্যা

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় চুরির অপবাদ সইতে না পেরে গ্যারেজের এক কর্মচারী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরেই নিহতের বড় ভাই দ্বীন ইসলাম বাদি হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ২/৩জনকে আসামী করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন।

আসামীরা হলেন, উপজেলার গান্ধারচর গ্রামের মৃত আবদুল হাইয়ের ছেলে গ্যারেজ মালিক মো. বাবুল মিয়া (৪৫) ও তার ছেলে নাঈম (২৫) এবং একই গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়ার কর্মচারী ইয়াছিন (২৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার পাইক লক্ষীয়া গ্রামের মৃত আবদুল কদ্দুছের ছেলে নাহিদ (২০)। নাহিদ বাবুল মিয়ার গ্যারেজের একজন কর্মচারী ছিল। গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বাবুল মিয়ার গ্যারেজ থেকে কিছু মালামাল চুরি হয়। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে বাবুল ও তার কয়েকজন কর্মচারী নাহিদকে চুরির সন্দেহে গ্যারেজে আটক করে বেদম মারধর করে। এসময় চুরি যাওয়া মালামালের মূল্য তিন লাখ টাকা নির্ধারণ করে পাঁচ দিনের মধ্যে এ টাকা পরিশোধ করার শর্তে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়। নাহিদ মারপিট ও চুরির অপবাদ সইতে না পেরে ওই রাতেই বিষপান করে তার নিজ বাড়ির উঠানে গিয়ে মাটিতে লুটে পড়ে গংরাতে থাকে। গংরানোর শব্দ শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে অধিকতর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে যাওয়ার পথে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নাহিদ মারা যায়।

নিহত নাহিদের ভাই দ্বীন ইসলাম বলেন, আমার ভাই নাহিদ ৫/৬মাস ধরে বাবুলের গ্যারেজে চাকুরী করত। যে রাতে গ্যারেজে চুরি হয়েছে ওই রাতেই বাবুল মিয়ার গ্যারেজের দুই কর্মচারী রাজু আহমেদ ও হাসান পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। তাদের না ধরে নিরপরাধ আমার ভাই নাহিদকে চুরির অপবাদ দিয়ে গ্যারেজে আটকে বেদম পিটিয়েছে। শুধু তাই নয়, চুরি যাওয়া মালামালের মূল্য তিন লাখ নির্ধারণ করে এ টাকা পাঁচ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার শর্তে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়। মারধর ও চুরির অপবাদ সইতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাকুন্দিয়া থানার এসআই মো. মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আজ শনিবার দুপুরে লাশ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরেই নিহতের বড় ভাই দ্বীন ইসলাম বাদি হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় মামলা করেছেন। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।

Share.