পাকুন্দিয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন-বিক্ষোভ

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এমডিপি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ছাইফুল ইসলামের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে তিন ঘন্টা ব্যাপি এ কর্মসূচী পালন করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী উপস্থিত হয়ে তাদের দাবী পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান থেকে সরে আসে।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ছাইফুল ইসলামকে পাশের এলাকার কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ছেলে মারধর করে। আজ বুধবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ফিরে এ মারধরের ঘটনা জানতে পারে। পরে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ক্লাস বন্ধ রেখে হামলাকারীদের বিচারের দাবীতে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক ছাইফুল ইসলাম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের অফিসসহকারী নাজিম উদ্দিন একজন পুরাতন ছাত্রীর অষ্টম শ্রেণির প্রত্যয়নপত্র লিখে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর আনতে যান। এ সময় প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিনকে ওই ছাত্রীর ভর্তি রেজিষ্টার ও হাজিরা খাতা দেখাতে বলেন। এতে নাজিম উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ও তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষকের গায়ে হাত তুলেন নাজিম উদ্দিন। পরের দিন মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে বহিরাগত ১০-১৫ জনের একটি উচ্ছৃঙ্খল ছেলের দল বিদ্যালয়ের সামনের একটি দোকানে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে পালিয়ে যায়। এ ঘঁনার প্রতিবাদেও দোষীদের বিচারের দাবীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।

প্রধান শিক্ষক ছাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, হামলায় আহত হয়ে তিনি কিশোরগঞ্জ সদও আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভয়ে তিনি এখন পর্যন্ত মামলা করেননি। তিনি বলেন, আমি ২০২০ সালে এই বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। পুরাতন ছাত্র-ছাত্রীদের আমি চিনিনা। তাই অফিস সহকারীকে বলেছিলাম ওই ছাত্রীর ভর্তি রেজিষ্টার ও হাজিরা খাতা আমাকে দেখানোর জন্য। এতে তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে আমার ওপর চড়াও হয়। উল্টো আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বাইওে গিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে আমি নাকি তাকে মারধর করেছি। নাজিম উদ্দিনের উস্কানিতে তাঁর লোকেরা হামলা করেছে বলে প্রধানি শক্ষক ধারণা করেন। তিনি আরো বলেন, আমাকে মারার সময় হামলাকারীরা বারবার মুখে উচ্চারণ করেছে- তুই নাজিম উদ্দিন স্যারকে মেরেছিস কেন?

এ বিষয়ে অফিস সহকারী নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি প্রধান শিক্ষকের গায়ে হাত তুলিনি। প্রধান শিক্ষক আমার গায়ে হাত তুলেছে। তিনি আরো বলেন, কারা প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা করেছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চেšধুরী বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে আমি নিজেই এ বিষয়ে তদন্তের কাজ করছি। দুই-তিনদিনের মধ্যেই বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

Share.