নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর’ রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ বহুকাল আগেই এই কথাটি লিখে গেছেন। আর তার এই কথাটি বিভিন্ন ঋতুতে নানা রূপে নানা সাজে আমাদের এই সবুজ বাংলায় ফুটে উঠে। তেমনি বর্তমানে শীত ও শীতল হাওয়ায় বাংলাকে সাজাতে মাঠে মাঠে ফুঠে থাকা সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্য মন ভোলানোর মতো নয়।
সবুজের মাঝে হলুদের ছাপ, দেখলে মনে হয় প্রকৃতি আজ হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে আছে। কিশোরগঞ্জে মাঠে মাঠে এখন এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে। বাতাসে হেলে দোলে সরিষা ফুল গুলো সুভাষ ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। জমি থেকে ভেসে আসা হলুদ বরণ সরিষা ফুলের কাঁচা মিষ্টি গন্ধে চারদিক এখন মাতোয়ারা। রোপা আমন কাটার পর বোরো আবাদের মাঝামাঝি সময়ে করা হয় সরিষা আবাদ। তেল জাতীয় এই ফসলে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হয় তেমনি গ্রামের কিশোর কিশোরীরা মেতে উঠে এর সৌন্দর্যে। কম পুঁজিতে সরিষা চাষে লাভ দ্বিগুণ। প্রতিবছর ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় জেলায় প্রতিবছর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বাড়লেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আব্দুস সাত্তার জানান, এ বছর উন্নতমানের সরিষা চাষ হয়েছে। দেশে তেলের আমদানি রোধে সরিষা আবাদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে সরকার। সেই সাথে খরচ ও চাষের সময় দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সরিষা চাষ। গত কয়েক বছরে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে শস্যটির ফলনও আগের চেয়ে বেড়েছে। এ বছর জেলায় নয় হাজার তিনশ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।