আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বকেয়া বেতন-ভাতা ও শিখন কেন্দ্রের ভাড়ার দাবীতে উপজেলা কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন একটি বেসরকারী সংস্থার নারী শিক্ষকরা। আজ রবিবার (৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার পাকুন্দিয়া-হোসেনপুর সড়কের পাশে অবস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ‘আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন’ কর্মসূচীর পাকুন্দিয়া উপজেলা কার্যালয়ের সামনে তারা এ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানের লক্ষ্যে উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পিপলস্ ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি) নামের একটি বেসরকারী সংস্থা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নে ৫৪টি উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে নারী শিক্ষক নিয়োগ দেয় সংস্থাটি। তাদের মাসিক বেতন পাঁচ হাজার টাকা এবং প্রতিটি শিখন কেন্দ্রের মাসিক ভাড়া এক হাজার পাঁচশ টাকা নির্ধারন করা হয়। নিয়োগ পাওয়া ৫৪জন শিক্ষক ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজে যোগদান করেন।
শিক্ষকরা জানান, যোগদানের একমাস পরেই ৫৪জন শিক্ষকের মধ্যে ১৯জন শিক্ষকের বেতন ও শিখন কেন্দ্রের ভাড়া নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। ১৯জন শিক্ষক নয়মাস ধরে বেতন-ভাতা ও শিখন কেন্দ্রের ভাড়া পাচ্ছেন না। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার বেতন-ভাতার আশ্বাস দিলেও পরে নানা টালবাহানা করে বেতন ও ভাড়া বকেয়া রেখেছে। অনেকদিন অপেক্ষার পর আজ রবিবার সকাল থেকে অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন তারা।
শিক্ষক সাবিকুন্নাহার বলেন, আমরা নয় মাসের বেতন ও শিখন কেন্দ্রে ভাড়া পাব। কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ বেতন ও ভাড়া না দিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা করছে। বেতন ও ভাড়ার টাকা না পাওয়ায় আমরা অনেক কষ্টে আছি। শিখন কেন্দ্রের মালিক ঘর থেকে বের করে দিতে চাচ্ছে।
শিক্ষক ফাতেমা আক্তার বলেন, অফিসে এসে বেতন চাইলেই বলে ব্যবস্থা করছি। আজ নয় কাল, করতে করতে নয় মাস পার করে দিয়েছে। তবুও বেতন দিচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে এই অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী পালিয়ে গেছে। আমরা এসে কাউকে পাইনি।
পাকুন্দিয়া উপজেলা কার্যালয়ের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহীন হায়দার বলেন, উপজেলার প্রতিটি এলাকা যাচাই-বাছাই করে ৫৪টি বিদ্যালয়ের তালিকা ইউএনও স্যারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইউএনও স্যার ৩৫টি বিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছেন। ১৯টি বিদ্যালয়ের অনুমোদন না দেওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবশ্য ১৯টির অনুমোদন আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, যাচাই-বাছাই করে এ প্রকল্পে মোট ৩৫জন শিক্ষকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। পরে আমাকে না জানিয়ে আরও ১৯জন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে এখন কিছুই করার নেই।