স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় ১১ বছর বয়সী শিশু পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার অপরাধে শফিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামি শফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। এ সময় ভিকটিম শিশুকে আরোপিত অর্থদন্ডের দেড় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন বলেও রায় দেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শফিকুল ইসলাম করিমগঞ্জ উপজেলার পিটুয়া এলাকার মোঃ দ্বীন ইসলামের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ুয়া ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিতো। কিন্তুু সে এ প্রস্তাব এড়িয়ে যেত। ২০২১ সালের ২০ আগস্ট রাতে শিশুটি প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হয়। টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর আগে থেকেই সেখানে উৎপেতে থাকা শফিকুল মুখ চেপে ধরে একটি ঝোঁপে নিয়ে ধর্ষণ করেন। টয়লেট থেকে ঘরে ফিরতে দেরী হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে বের হন। এক পর্যায়ে কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে গেলে ঝোঁপে পড়ে থাকতে দেখেন তাকে। এ সময় শফিকুলকেও হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন । এ ঘটনায় পরদিন সকালে শিশুটির মা বাদী হয়ে শফিকুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে করিমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুজ্জামান লিংকন মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম এ আফজল বলেন, শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ১৪ (চৌদ্দ) বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫०,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জরিমানা এবং একই আইনের ৯(১) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আরোপিত অর্থদন্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য হবে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর নিকট হতে বা তাঁর বিদ্যমান সম্পত্তি হতে বা তাঁর বিদ্যমান সম্পন হতে আদায় করা সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে তিনি যে “সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন সে সম্পদ হতে বিধিমোতাবেক আদায়যোগ্য হবে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি হিসেবে ভিকটিম আরোপিত অর্থদন্ডের মোট ১,৫০,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর পিপি আইনজীবী এম এ আফজাল এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম পলাশ।