পাকুন্দিয়ায় কালবৈশাখি ঝড়ে বাড়ি ঘরসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় হঠাৎ বয়ে যাওয়া কালবৈশাখি ঝড়ে বাড়িঘর ও শতাধিক লিচুগাছসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গাছ ভেঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ওপর পড়ে যাওয়ায় পুরো উপজেলায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই ঝড় বয়ে যায়।

শুক্রবার উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া, কুমারপুর ও নারান্দি গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ওইসব এলাকায় ভুট্রা, বুরো ধান, কলাগাছ ও শতাধিক লিচুগাছের ডালপালা ভেঙ্গে ব্যাপকভাবে নষ্ট হয়েছে। কুমারপুর ও হোসেন্দী মাঝপাড়া গ্রামে কয়েকটি টিনের ঘরের চালা উড়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মধ্যে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষী নাসির উদ্দিন জানান, তার সাত থেকে আটটি বড় বড় লিচু গাছের ডাল ভেঙ্গে গেছে। একই গ্রামের লিচু চাষি মাসুদ মিয়া জানান, তার পাঁচটি লিচু গাছের ডাল ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। তাদের মতোই ওই গ্রামের অন্তত ৫০ জন লিচু চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

কুমারপুর গ্রামের কৃষক মো. নজরুল ইসলাম জানান, তার ৭০ শতাংশ জমির ভুট্রা গাছ ঝড়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। ভুট্রা গাছগুলোতে মাত্র ফুল ধরেছিল। একই গ্রামের কৃষক মো. খোকন মিয়া বলেন, আমি ধারদেনা করে পাঁচ কাঠা জমিতে ভুট্রা ও চার কাটা জমিতে বুরো ধান চাষ করেছিলাম সবটুকুই বৃহস্পতিবার রাতের ঝড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি একেবারে পথে বসে গেছি।

কুমারপুর গ্রামের বৃদ্ধ কাশেম আলি বলেন, আমি গরীব মানুষ। আমার একমাত্র টিনের বসত ঘরটি ঝড়ে উড়ে নিয়ে গেছে। আমি ঘরটিকে কিভাবে মেরামত করব চিন্তা করে পাচ্ছিনা।

ওই এলাকার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা আতাউল্লাহ বলেন, ২০-২৫ বিঘা জমির ভুট্রা নষ্ট হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সংখ্যা আট থেকে দশ জন হবে। আমি বিষয়টি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্যারকে অবহিত করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম বলেন, উপজেলায় ঝড়ে অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্রা ও বুরো ধানের কিছুটা ক্ষতি হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। কারণ ঝড়ে ক্ষেতের ভুট্রা গাছ হেলে পড়েছে এবং ধানের ফুল ঝড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে আর্থিক সহায়তা পায় সেজন্য তাদের নামের তালিকা মন্ত্রণাণলয়ে পাঠানো হবে।

কিশোরগঞ্জ পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পাকুন্দিয়া জোনাল অফিসের উপ-ব্যাবস্থাপক(ডিজিএম) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পুরো উপজেলায় ঝড়ে গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ওপরে পড়ে তার ও খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অতি দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতেই ভোর থেকে লাইনম্যানরা কাজ করে যাচ্ছে।

Share.