জাফরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ

পরিষদ হলো জনগণের নিজ অধিকারের জায়গা। বিগত ১৬ মাসে আমরা জাফরাবাদ ইউনিয়নে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখতে পায় নাই। আমরা দেখেছি বিভিন্ন প্রকল্প নামে আছে বাস্তবে নাই। শুধু খাতা পত্রের নাম আছে কাজের কাজ কিছু হয় নাই। চেয়ারম্যান বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। এখন যখন জনগণ মাঠে নেমেছে তখন চেয়ারম্যান সাহেব হন্য হয়ে কাজ শুরু করেছে। ওয়ার্ডে কোন কাজ করলে জনগণকে জানিয়ে করতে হয়। ওয়ার্ডে ওয়ার্ড সভা দিতে হয়। সাধারণ জনগনের চাহিদা মত কাজ করতে হয়। জনগণের যে কাজ জরুরি সেই কাজ করতে হয়। চেয়ারম্যান জনগণের চাহিদা না নিয়ে প্রকল্পের নাম দিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে কোন কাজেই করে নাই।

রোববার (১৪ মে) বিকেলে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাদাৎ মো. সায়েমের দুর্নীতির প্রতিবাদে জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে আয়োজিত মানববন্ধনে দুর্নীতির এসব অভিযোগ করেন সাবেক ইউ সদস্য আশরাফুল আলম।

ইউপি চেয়ারম্যান এর আগে আবু সাদাৎ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাফরাবাদ ইউনিয়নের ছাত্রলীগ সভাপতি ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাদাৎ মো. সায়েম ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ বাজারে পানি নিষ্কাশনের দুটি নালা ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। চেয়ারম্যান ওই নালার পুরোনো মালামাল, ইট, স্ল্যাব বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমলীতলা পাকা রাস্তা থেকে আজিমগঞ্জ বাজার পর্যন্ত মাটি সড়ক সংস্কারের প্রকল্প দেখিয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন সড়কের কাজ দেখিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ বিষয়গুলোতে গত এপ্রিল মাসে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক, করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তারই পরিষদের আট সদস্য। ওই আট সদস্য হলেন ইউপি সদস্য মো. সোহাগ মিয়া, সারওয়ার আলম, মো. সাইদুর রহমান, মো. মতিউর রহমান, জুনায়েদ তুর্য্য, আলম মিয়া, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নার্গিস আক্তার ও আছমা আক্তার।

নারী ইউপি সদস্যের কন্যা ঊষা তার বক্তব্যে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নারী সদস্যদেরকে বিভিন্ন গালমন্দ করেন। এমনি ইউনিয়ন পরিষদে গেলে বলে তাদের কোন কাজ নেই পরিষদে কেন এসেছে এসব কথা বলেন। এছাড়াও বলেন পরিষদে নারী ইউপি সদস্য বলে কোন পদে নেই।

সাইটোটা গ্রামের বাসিন্দা মো. জুয়েল বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচনের আগে আমাদের কাছ থেকে ১০ টাকা চেয়ে নিয়ে বিড়ি খেয়েছি। তার বিভিন্ন দেনা পাওনা পরিশোধ করেছেন নির্বাচনের পরে। এখন বাড়িতে তিন তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ঘর তৈরি করতেছেন। যে চেয়ারম্যান নির্বাচনের আগে ১০ টাকা চেয়ে নিয়ে বিড়ি খেয়েছেন এই চেয়ারম্যান কিভাবে তিন তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে বাড়ি করে। বেতনই বা কতো ইউনিয়নবাসী এ বিষয়গুলো জানতে চাই।

রাজারচর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মতিউর রহমান বলেন, সায়েম চেয়ারম্যানের অবস্থা এমন ছিল স্থানীয় বাজারে বসে চাল-ডাল, পিয়াজ-রসুন বিক্রি করতো। নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জনগণের বাজেট-বরাদ্দ লুটপাট করে আত্মসাৎ করেছে। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে এই মানববন্ধন করছি।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তানভীর আহমেদ, সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফুল আলম, জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান স্বপন, সমাজসেবক জুয়েল মিয়া, নারী ইউপি সদস্যের কন্যা ঊষা প্রমুখ। মানববন্ধনে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ ইউনিয়নের কয়েকশ নারী-পুরুষ  অংশগ্রহণ করে।

Share.