পাকুন্দিয়ায় বাড়িঘর ভাঙচুর-লুটপাট, চারদিন বাড়ি ছাড়া একটি পরিবার

0

আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক দল মাদকাসক্ত দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে একটি পরিবারের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করেছে। এ সময় হামলাকারীরা প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন আসবাবপত্রসহ মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। মাদকাসক্তদের ভয়ে ওই পরিবারের শিশু সন্তানসহ ১০-১২ জন নারী-পুরুষ চারদিন ধরে বাড়ি ছাড়া। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার (১৯ মে) সকালে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪০ থেকে ৫০ জনকে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী আছাদ মিয়ার স্ত্রী মোছা: রাজিয়া আক্তার হেনা। এর আগে সোমবার (১৫ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের নামা সালুয়াদি (মোড়ল বাড়ি) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে চঞ্চল (২৬), মৃত করিম মিয়ার ছেলে মিলন (৪০), আলি হোসেনের ছেলে ইমন (২০) ও জালাল (৩২), কাদের মিয়ার ছেলে সোহেল (৩৫) ও সুমন (২৫), জহুর আলির ছেলে নাইম (২১) ও আজিম (২৩)।

এলাকাবাসি ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৫ মে সোমবার বিকেলে নামা সালুয়াদি গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে দীন ইসলাম বাড়ির পশ্চিম পাশে নির্মিত গ্রামীণ ফোনের একটি টাওয়ারের নিচে বসে বিশ্রাম করছিলেন। পাশেই বসে গাঁজা সেবন করছিল মিলন মিয়ার ছেলে চঞ্চলসহ কয়েকজন মাদকাসক্ত। এ সময় চঞ্চলকে একটু দূরে গিয়ে গাঁজা সেবন করতে বলে দীন ইসলাম। এতে চঞ্চল ক্ষীপ্ত হয়ে দীন ইসলামকে গালগাল করতে থাকে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয়ই যার যার বাড়ি চলে যায়। এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত ১০ টার দিকে চঞ্চলের বাবা মিলনের নির্দেশে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি দল দা, লাঠি, ছোড়া, বলম, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দীন ইসলামদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা চারটি বসত ঘর ও একটি মুদি দোকান কুপিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় ঘরে ঢুকে যাবতীয় আসবাবপত্র ভাঙচুর শেষে একটি রঙিন টেলিভিশন, তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার, দুইটি চুলা, একটি বাইসাইকেল, দুইটি ছাগল, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ দেড়লাখ টাকাসহ ডাল, চাল ও হাড়িপাতিল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আহুতিয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

অভিযোগকারী মোছা: রাজিয়া আক্তার হেনা বলেন, অভিযুক্তরা শুধু বাড়িঘরই ভাঙচুর করেনি। ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে খাওয়া পড়ার সব জিনিস লুট করে নিয়ে গেছে। রান্না করে খাওয়ার মতো কোনো জিনিস রেখে যায়নি। আমরা অন্যের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করছি। ওরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তাই ওদের ভয়ে চার-পাঁচদিন ধরে আমরা বাড়ি ছাড়া। বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে থেকে দিন পার করছি। কোনো পুরুষ মানুষ বাড়িতে না থাকায় থানায় অভিযোগ দিতে দেরী হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করছি। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের কাউকে বাড়ি পাওয়া যায়নি।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ হাসান সুমন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.