হোসেনপুর জোড়া খুনের মামলায় চারজন গ্রেফতার

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ভাই-বোন হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ।

মাহমুদ হাসান ওরফে আলমগীর (৩০) ও নাদিরা (২১) হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ ইমরান (২৬) আরমান মিয়া (১৮) মা ফরিদা খাতুন (৪১) ও তার ছোট ছেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় নাম জানায়নি পুলিশ।

শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টায় আসামি মো. ইমরানকে লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ থেকে ও একই দিন সাড়ে ৪টার দিকে আরমান মিয়া (১৮) এবং তাদের তাদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছোট ভাইকে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে তাদের মা ফরিদা খাতুনকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের উত্তর কুড়িমারা গ্রামের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা।

পুলিশ সুপার জানান, জমিতে চারাগাছ রোপন ও কাটাকে কেন্দ্র করে বিরোধিতার জেরে জোড়া এ খুনের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোঃ শামসুল ইসলামের বাড়ির সামনে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ডাকাডাকি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন শামসুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগীদের মারপিট ও কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনাস্থলে মাহমুদুল হাসান ওরফে আলমগীর মারা যায়। আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হুমায়ুন কবির, সালমান, নাদিরা ও শাহিদাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে নাদিরা মারা যায়। আহত অন্যান্যরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

রাসেল শেখ আরও জানায়, জমিতে চারাগাছ রোপন ও কাটাকে কেন্দ্র করে জোড়া খুনের ঘটনার আগের দিন বুধবার বিকাল ৪টার দিকে জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামি মোঃ আব্দুল কাদির বিরোধপূর্ণ জমিতে চারাগাছ রোপন করে এবং তার বড় ভাই শামসুল ইসলাম পূর্বে রোপনকৃত কয়েকটি চারাগাছ কেটে ফেলায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন বৃহস্পতিবার সকল ৬টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে পুনরায় অবশিষ্ট চারাগাছ রোপন করতে গিয়ে দেখে পূর্বের দিনের লাগানো চারাগাছগুলো উপরিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। তখন আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে শামসুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে ডাকাডাকি এবং গালিগালাজ করলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার আলামত হিসেবে রক্তমাখা একটি জিন্সের ফুল প্যান্ট, একটি খয়েরী রঙের ফুলহাতা শার্ট, একটি আচারযুক্ত কুড়াল, একটি আচারতযুক্ত কোদাল, একটি লোহার খুন্তি, একটি রক্তমাখা কাঠের হাতল যুক্ত দা, একটি পলিথিন ব্যাগের ভিতরে রক্তযুক্ত মাটি, একটি রক্তমাখা খয়েরী রঙের টি-শার্ট, একটি গাঢ় নেভী ব্লু-রঙের ফুল প্যান্ট ও একটি সাত ইঞ্চি লম্বা ধারালো সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য তিন আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিসএবি) নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ আল আমিন হোসাইন, হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার ও হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান টিটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share.