আছাদুজ্জামান খন্দকারঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভায় সার্ভার জটিলতায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ নিতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন নাগরিকরা। ফলে অভিভাবকরা সন্তানকে স্কুল-কলেজে ভর্তি এবং অনেকেই পেনশন, পাসপোর্ট ও জমি রেজিস্ট্রিসহ বিভিন্ন কাজে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জানা যায়, পৌরসভার নাগরিকদের সেবাসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি সেবা হলো জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ। স্কুল কলেজে ভর্তি, বিয়ে, পেনশন, পাসপোর্ট, চাকরি, জমি বেচা-কেনাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজের জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ পেতে সংশ্লিষ্ট শাখায় ভিড় করেন নাগরিকরা।
পৌরসভায় জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে আসা সাবিনা ইয়াসমিন নামের একজন চাকরিজীবি বলেন, আমি গাজীপুরে চাকরি করি। আমার স্কুল পড়–য়া মেয়ের নামে ভুল রয়েছে। এজন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করা প্রয়োজন। পৌরসভায় গত সাতদিন ধরে ঘুরছি। কিন্তু সনদ সংশোধন করতে পারছিনা। আমার পক্ষে কি সম্ভব প্রতিদিন গাজীপুর থেকে এখানে আসা। তারা বলছে, সার্ভার সমস্যার কারণে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সনদ প্রয়োজন। সনদ না পেয়ে মারাত্মক বিপাকে পড়েছি।
মেনু মিয়া নামের অন্য একজন বলেন, আমার বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করাবো। জন্ম নিবন্ধন সনদে ভুল থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সংশোধনের জন্য বেশ কয়েকদিন ধরে পৌরসভায় ঘুরছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। কম্পিউটার অপারেটর বলছে, সার্ভার নেই, সার্ভার আসলে হবে। কিন্তু সার্ভার কবে আসবে তা কেউ বলতে পারছেনা। এভাবে প্রতিদিন পৌরসভায় এসে হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
এম এ জামান নামের একজন বলেন, আমার বাবা-মা মারা গেছেন। তাদের মৃত্যু সনদের জন্য দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরছি। কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারণে মৃত্যু সনদ নিতে পারছিনা। জমি বিক্রি করতে বাবা-মায়ের মৃত্যু সনদ প্রয়োজন। সনদ না পাওয়ায় জমি বিক্রি করতে পারছিনা। ফলে খুবই সমস্যার মধ্যে দিন কাটছে।
পৌরসভায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদের কাজ করেন খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সার্ভার আপডেটের কার্যক্রম চলমান। এজন্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় দুই মাস ধরে সার্ভার বন্ধ রয়েছে। সার্ভার না থাকায় সব কার্যক্রমই বন্ধ রয়েছে।
পাকুন্দিয়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুর রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা বলছেন, অতি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু প্রায় দুই মাস গত হয়ে গেছে। এখনো সমাধান হচ্ছে না। তবে অতি দ্রুতই সার্ভার সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।